ছোটদের বড় পরীক্ষা : প্রথম দিনে অনুপস্থিত ৩১৫০ জন

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর, ২০১৭ ০৯:২১ , আপডেট: ২০ নভেম্বর, ২০১৭ ০৯:২৪

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


কক্সবাজার আদর্শ মহিলা কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষার দৃশ্য।

ইমাম খাইর, সিবিএন:
ছোট্ট সোনামনিদের এসএসসি পরীক্ষা-খ্যাত প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা ১৯ নভেম্বর শুরু হয়েছে। সারাদেশে ৯ম বারের মতো ছোটদের এই বড় পরীক্ষা জেলার সবকটি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রথম দিনের ইংরেজি পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ৩১৫০ জন। সেখানে প্রাথমিকে ১৮২৮ এবং ইবতেদায়ীতে ১৩২২ জন।
জেলার ১০১ পরীক্ষাকেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৫৬২১১ জন। সকাল ১১টায় শুরু হয়ে বেলা দেড়টায় পরীক্ষা শেষ হয়েছে। প্রতিদিনের পরীক্ষা অভিন্ন সময় সুচিতে চলবে। ২৬ নভেম্বর প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা শেষ হবে।
প্রথম দিনে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রের চৌহদ্দিতে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। সকলেই নির্দিষ্ট সময় বেলা ১১টা বাজার ঘন্টাখানেক আগেই পরীক্ষার্থীদের নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। তবে, অনেক অভিভাবককে উৎকণ্ঠিত দেখা গেছে।
কক্সবাজার কলেজিয়েট স্কুলের পরীক্ষার্থী মেয়ে মারিয়া সুলতানা সোহাকে নিয়ে কক্সবাজার আদর্শ মহিলা কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসা কেন্দ্রে হাজির হন বাবা মাহমুদুল হক। সকাল ১০টার প্রখর রোদ উপেক্ষা করে মেয়ে সোহা মনিকে গেটের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দেয়ার পূর্বমুহুর্তে ছোট্ট মনির দু’গালে চুমো খেয়ে বললেন, একদম টেনশন করবি না, মনোযোগ দিয়ে খাতায় লিখবি, কি ঠিক আছে।
সুবোধ বালিকার মতো ঘাড় হেলিয়ে দিয়ে সোজা গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো সোহা। তখনও মাহমুদুল হক ছল ছল চোখে মেয়ের চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে থাকে।
এদিকে সদর এলাকার পরীক্ষার নির্ধারিত হলগুলোর প্রবেশ পথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নোমান হোসেনের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভ কামনা করে ব্যানার টাঙানো হয়েছে। এটি এবারের পরীক্ষায় ভিন্ন মাত্র যোগ করেছে বলে জানিয়েছেন অনেক অভিভাবক।
রবিবারের পরীক্ষায় জেলার কোন কেন্দ্রে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পরীক্ষাকেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৪৪ ধারা জারি ছিল।
আজ দ্বিতীয় দিনে (২০ নভেম্বর) বাংলা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী কাল (২১ নভেম্বর) প্রাথমিকে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ইবতেদায়িতে সমাজ এবং বিজ্ঞান, ২২ নভেম্বর প্রাথমিকে বিজ্ঞান ও ইবতেদায়িতে আরবি এবং ২৩ নভেম্বর প্রাথমিকে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, ইবতেদায়িতে কুরআন ও তাজবিদ এবং আকাঈদ ও ফিকহ। সবশেষে ২৬ নভেম্বর উভয় পরীক্ষায় গনিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্যবারের মতো এবারো বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেওয়া হচ্ছে। জেলায় প্রাথমিক সমাপনিতে ৪৪০৬২ এবং এবতেদায়ীতে ১২১৪৯ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
উপজেলা ভিত্তিক প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী পরীক্ষার্থীর সংখ্যাঃ
সদরের ২০ কেন্দ্রে পিএসসিতে ৭৩২৯ জন, ইবতেদায়ীতে ২৯৪৬ জন। রামুতে ১২ কেন্দ্রে পিএসসিতে ৫৪১৯ জন, ইবতেদায়ীতে ১০৫৩ জন। চকরিয়ার ২৪ কেন্দ্রে পিএসসিতে ৮৮৮৩ জন, ইবতেদায়ীতে ২৪৪৮ জন। পেকুয়ায় ৭ কেন্দ্রে পিএসসিতে ৪২০১ জন, ইবতেদায়ীতে ১২১৫ জন। কুতুবদিয়ায় ৬ কেন্দ্রে পিএসসিতে ৩৩১৮ জন, ইবতেদায়ীতে ৫৭২ জন। মহেশখালীতে ৯ কেন্দ্রে পিএসসিতে ৬০৬৫ জন, ইবতেদায়িতে ১৬০৪ জন। উখিয়ায় ১২ কেন্দ্রে পিএসসিতে ৪৬১৯ জন, ইবতেদায়িতে ৯১১ জন। টেকনাফে ১১ কেন্দ্রে পিএসসিতে ৪২২৮ জন এবং ইবতেদায়িতে ১৪০০ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়া জেলায় ইংরেজি ভার্সনে পরীক্ষার্থী রয়েছে ৩৩ জন।
প্রাথমিক ও এবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী বৃত্তিঃ
সমাপনী পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করে থাকে সরকার। প্রাথমিক সমাপনীতে ৩৩ হাজার ট্যালেন্টপুল ও ৪৯ হাজার সাধারণ কোটাসহ মোট ৮২ হাজার ৫০০ জনকে বৃত্তি প্রদান করা হয়। ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে ৩০০ ও ২২৫ টাকা হারে বৃত্তি পায়।
ফলাফলঃ
প্রতিবারের মত এবারো ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ফল প্রকাশের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।