রাত ১২টায় বন্ধ হচ্ছে ইলিশ ধরা ও বিক্রি

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০৪:৫৯ , আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০৫:০৭

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসূমে (০১-২২ অক্টোবর) ২২ দিন নদ-নদী সাগর ও প্রাকৃতিক জলাশয়ে যাবতীয় মাছ আহরন নিষিদ্ধ। নদী-সাগর মোহনার বিভিন্ন পয়েন্টে প্রচারনা, টহল ও জেলে-মৎস্যজীবিদের সতর্ক করছেন মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহা পরিচালক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ মৎস্য অধিদপ্তরীয় টীম।

সিবিএন:

আজ শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

২২ অক্টোবর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ মাছ সংরক্ষণের জন্য মাছ ধরা ও বিক্রিতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, পূর্ণিমার তিন দিন আগে (আজ রাত ১২টা) এবং অমাবস্যার চার দিন পর (২২ অক্টোবর রাত ১২টা) পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন সময়। এ সময় জলাশয়ে জাল ফেলা নিষেধ।

এ সময়ে জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বরফ উৎপাদন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

তবে জেলেরা বলছেন, ইলিশের পেটে ডিম এখনো পরিপক্ব হয়নি। ডিম ছাড়ার সময় আরও পরে।

সিবিএন-এর বিশেষ প্রতিনিধি আতিকুর রহমান মানিকের প্রতিবেদন:
জেলায় প্রধান প্রজনন মৌসূমে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম সফল করতে সার্বিক প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে মৎস্য অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনব্যাপী জেলার সমুদ্র, নদ-নদী ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় জলাশয়ে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।

এ সময়ে ইলিশের মজুদ, পরিবহন, এবং খুচরা ও পাইকারী ক্রয়-বিক্রয়ও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এসময় প্রয়োজনীয় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য মৎস্য অধিদপ্তরীয় কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, কোস্টগার্ড ও পুলিশ ফোর্স সমন্বয়ে গঠিত টীম প্রস্তুত রয়েছে।

গৃহীত সব পদক্ষেপ মনিটরিং করতে কক্সবাজারে অবস্হান করছেন বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক শেখ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।

এছাড়াও নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে মৎস্য অধিদপ্তরীয় আরো ৮ জন কর্মকর্তাকে কক্সবাজারে সংযুক্ত করেছে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রনালয়। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে এরা বিভিন্ন উপজেলায় দায়িত্ব পালন করবেন।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (সদর) ডঃ মঈন উদ্দীন আহমদ জানান, সরকার গৃহীত কর্মসূচী কক্সবাজারে বাস্তবায়নের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আরো একাধিক মনিটরিং টীম কক্সবাজারে পৌঁছার অপেক্ষায় রয়েছেন। আজ থেকেই জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের একাধিক টীম বাঁকখালী নদী মোহনা, নাজিরারটেক ও সোনাদিয়া চ্যানেল, মাঝিরঘাট ও কক্সবাজার মৎস্য অবতরনকেন্দ্রসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সক্রিয় রয়েছেন। হাট-বাজার পরিদর্শন, বিভিন্ন ঘাটে নজরদারী, লিফলেট বিতরন, জনসমাগমস্হলে সচেতনতামূলক মাইকিং ও সার্বিক পরিস্হিতি পর্যবেক্ষনে নিয়োজিত রয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

শনিবার বিকালে মাঝিরঘাট, ৬ নং ঘাট, ফিশারীঘাট ও নুনিয়াছড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইতিপূর্বে সাগরে যাওয়া ফিশিংবোটসমূহ বাঁকখালী নদীতে ফিরে আসছে ও সমুদ্রফেরৎ শত শত বোট নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নোঙ্গর করে আছে।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, ১ তারিখের আগেই সমুদ্র থেকে ফিরে আসার জন্য সকল বোটের মাঝি-মাল্লাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তরীয় একাধিক টীম কয়েকদিন আগে থেকে বাকখাঁলী নদী মোহনা, নাজিরারটেক, চৌফলদন্ডী ঘাট ও মহেশখালী চ্যানেলে মাইকিং করে জেলেদের সতর্ক করেছে। ১ অক্টোবর (রবিবার) থেকে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পুরোদমে নজরদারী ও প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে ও দ্রুতগতিসম্পন্ন মৎস্য অধিদপ্তরীয় স্পীড বোটযোগে সাগরে টহল টীম সক্রিয় রয়েছে জানিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ডঃ মোঃ অাবদুল আলীম বলেন, কোস্টগার্ড নুনিয়াছড়া ষ্টেশন সংলগ্ন বাঁকখালী নদী মোহনায় যৌথ চেকপোস্ট দায়িত্ব পালন করছে।

১ অক্টোবর থেকে সমুদ্রফেরত ফিশিং বোট দেখা গেলে বোট জব্দ করে মালিক ও মাঝি-মাল্লাদের বিরূদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্হা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।