নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহেশখালীতে স্বাধীনতা যুদ্ধে পিতার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলায় করায় যুদ্ধাপরাধীরা শহীদ পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এতে করে হত্যার দায়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে করা মামলার ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে বড়মহেশখালী ইউনিয়নের পশ্চিম সিপাহীরপাড়ার শফিউল আলম এর ছেলে ওসমানগণীর বিয়ে উপলক্ষে বাড়ীর ছাদের উপর অনুষ্ঠান চলছিল। রাত অনুমান ১০ টার সময় মেহেদী অনুষ্ঠানকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে গুলিবিদ্ধ হয় একই এলাকার আব্দু শুক্কুরের ছেলে সোনা মিয়া (১৮)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। গুলি বর্ষণ বাইর থেকে করার বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে যায় সবার কাছে। কিন্তু এই মৃত্যুকে হাতিয়ার হিসেবে পেতে তদবির শুরু করে স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীরা। তারা নিহত সোনা মিয়ার পরিবারকে বশে নেয়। প্রথম দিকে সোনামিয়ার পরিবারও গুলিটি বাইর থেকে এসেছে বললেও পরে উল্টো যায়। উল্টে গিয়ে তারা শফিউল আলমের ছেলেদের ও মেয়ে জামাই পূর্ব দেবেঙ্গা পাড়ার আমিন শরীফ, আমিন শরীফের পুত্র আবদুর রহিম ও কিশোর সিরাজুল মোস্তফাকে আসামী মামলা দায়ের করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব দেবেঙ্গা পাড়ার আমিন শরীফের পিতা রহিম বক্সুসহ আরো পাঁচজনকে হত্যা করেছিল স্থানীয় যুদ্ধাপরাধীরা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলে রহিম বক্সুর বড়ছেলে নুরুল আমিন বাদি হয়ে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিহ্নিত ওই যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ১নং সাক্ষী নুরুল আমিনের ছোটভাই আমিন শরীফ। কিছুদিন পরে এই মামলার শুনানী শুরু হবে।
তথ্য মতে, শুরু থেকে এই মামলা থেকে রেহাই পেতে যুদ্ধাপরাধীরা আসামীরা মরিয়া হয়ে উঠে। তারা বিভিন্ন সময় শহীদ রহিম বক্সুর পরিবারের সদস্য, বাদি ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। তারা বাদি ও সাক্ষী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ফাঁদে ফেলার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। এর অংশ হিসেবে সোনা মিয়ার মৃত্যুর ঘটনাকে আঁড়াল করে শহীদ বক্সুর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। একই সাথে শফিউল আলম এর ছেলেদের আসামী করেছে। মামলায় আমিন শরীফকে প্রধান আসামী ও তার দু’পুত্রকে ২ ও ৩ নং আসামী করেছে। অথচ ঘটনাটি ঘটেছে সিপাহী পাড়ার শফিউল আলমের বাড়িতে। যুদ্ধাপরাধীতের ষড়যন্ত্রে মামলা হয়েছে বলে এমনটি হয়েছে অভিযোগ করেন শহীদ রহিম বক্সুর মামলার বাদি ও পরিবারের সদস্যরা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, যুদ্ধাপরাধ মামলাকে বানচাল করতে যুদ্ধাপরাধীরা ষড়যন্ত্র করছে। মিথ্যা মামলা দায়ের করায় মামলাটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। তাই অধিকতর তদন্ত করে সোনা মিয়ার মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটন করার দাবি জানান তারা। এই জন্য তারা পুলিশ সুপার ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তা না হলে শহীদ রহিম বক্সুসহ আরো চার শহীদের হত্যায় দায়ের করা মামলা বানচাল হয়ে যাবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।