শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রতিনিধি
কক্সবাজার সদরে ঈদগাঁওয়ের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা। তারা বিভিন্ন এলাকায় পূর্ব পরিচিত বা নিকট আত্মীয় স্বজন, ভাড়া বাসা, কলোনীর কাছে স্থান নিয়ে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। এদিকে স্থানীয়রা জানান, যে হারে প্রতিনিয়ত গাড়ি যোগে রোহিঙ্গারা ঈদগাঁওতে ঢুকে পড়ছে আইনী পদক্ষেপ না নিলে ঈদগাঁওর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে। এতে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংগঠিত করে নীরবে সে দেশে পালিয়ে যাবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
সচেতন মহলের জোর দাবি দ্রুত এসব রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নিয়ে উখিয়া এলাকায় স্থাপিত ক্যাম্পে রাখা হোক। খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ঈদগাঁওর বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় নানা ভাবে আশ্রয় নিয়েছে ওপার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। তবে পূর্বে চলে এসে এলাকায় ছড়িয়ে ছিড়িয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের বাড়ীঘরে সাম্প্রতিক সময়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা হরেক রকম কৌশল অবলম্বন করে অবস্থান করছে। অন্যদিকে এরা ইসলামাবাদের পশ্চিম গজালিয়া, আউলিয়াবাদ, বাম বাগান, ইউছুপেরখীল, বাঁশঘাটা, ঈদগাঁওর ভাদিতলা, শিয়া পাড়া, গরুর বাজার, কলেজ গেইট, জাগির পাড়া, ইসলামপুরের ভিলেজার পাড়া, পূর্ব নাপিতখালী, জুমনগর, হাজী পাড়া, শাহ ফকির বাজার, তৎসংলগ্ন এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে আসা প্রায় সহ¯্রাধিক রোহিঙ্গা স্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। পাহাড়ী এলাকায় রোহিঙ্গা অবস্থানের ফলে মাদকের ছড়াছড়ি, আইন শৃংখলার চরম অবনতি হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেন এলাকার সাধারন লোকজন। গ্রামাঞ্চলে ওদেরকে সনাক্তকরণ পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন এখন সময়ের দাবীতে পরিনত হয়ে পড়েছে বলে আবদুল করিম, জানে আলম, রাশেদ কামালসহ অনেকেই জানান। এদিকে ইসলামপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার নুরুল আজিম জানান, নতুন অফিস বাজারের পাহাড়ে, ফুটবল খেলার মাঠের পূর্বে সরকারী সামাজিক বনায়নের পাহাড়ে পূর্বে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সাথে নতুন ভাবে মিশে গেছে শতাধিক পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা। এদিকে ঈদগাঁও মেহেরঘোনা ও চান্দেঁর ঘোনা এলাকায় শতকরা ২০ ভাগ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। ইসলামপুর ইউনিয়নের পূর্ব নাপিতখালী মেম্বার সাহাব উদ্দিন জানান, কিছু নতুন পুরাতন রোহিঙ্গা রয়েছে। জুমনগর শতকরা ৪/৫ ভাগ রোহিঙ্গাদেরকে দেখা যাচ্ছে বলে জানান মেম্বার আবদু শুক্কুর। আলাপকালে কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, তারা আর কখনো মায়ানমারে ফিরে যেতে চায় না। এখানেই স্থায়ীভাবে থাকতে চায়। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, এখন রোহিঙ্গাদের পদচারনা অনেক বেড়ে গেছে আগে কেউ আসলে গোপনে থাকে, কিছুদিন পরে ঘর থেকে বের হতো কিন্তু এখন বীরদর্পে সবাই হাটাচলা করছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের অস্থিত্ব সংকটে পড়বে হবে। তাই দ্রুত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করে তাদের আটক পূর্বক সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পে প্রেরণেরও দাবী জানান এলাকাবাসী। অন্যদিকে সচেতন মহলের মতে, স্থানীয় প্রশাসন যদি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থাান নেন, তাহলে এলাকা থেকে এদের সরানো সম্ভব হবে। এই বিষয়ে ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ খায়রুজ্জামানর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঈদগাঁওতে বহিরাগত রোহিঙ্গাদের কোন ভাবেই ঠাঁই দেওয়া হবেনা। অভিযান হবেই। রোহিঙ্গা সমস্যা পুলিশের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব না, এ ব্যাপারে সকল শ্রেনীর পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।