প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

বর্তমানে দেশে মৎস্য উৎপাদন হয় প্রায় ৩৯ লাখ মেট্রিক টন। আর ২০২১ সালের মধ্যে দেশে মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ লাখ মেট্রিক টন। তারই লক্ষ্যে দেশের মৎস্য সেক্টর তথা সমুদ্র সম্পর্কিত অর্থনীতির উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ ফিশারিজ রিচার্স ইন্সটিটিউটের (বিএফআরআই) মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ গতকাল শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার মৎস্য গবেষণা ও প্রযুক্তি কেন্দ্রে আয়োজিত কাঁকড়া চাষীদের তিনদিনের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

‘কৃত্রিম পদ্ধতিতে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদন কৌশল’ শীর্ষক উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএফআরআই মহাপরিচালক আগামী চার বছরের মধ্যে দেশে মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ টন বৃদ্ধি পাওয়ার আশা করে বলেন- ‘রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে দেশের মৎস্য বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সাফল্য পাওয়ার তথ্যও জানান তিনি।

ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ আরো বলেন- ‘আমরা কাঁকড়া, কুচিয়াসহ অপ্রচলিত মৎস্যপণ্য উৎপাদন করেই এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারি।’

তিনি বলেন- ‘চিংড়ি চাষে নানা রোগব্যাধি রয়েছে। কিন্তু কাঁকড়া চাষে তেমন রোগ বালাই নেই। বাজারে দামও খুব ভাল, কেজি ১২শ থেকে ১৪শ টাকার কম নয়।’

তবে সবাইকে একযোগে কাঁকড়া চাষের দিকে ঝুঁকে না পড়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন- সবাই যদি সাগর থেকে নির্বিচারে পোনা সংগ্রহ করে, তাহলে প্রকৃতি বা জীববৈচিত্র নষ্ট হয়ে যাবে।’

গত কয়েক বছর আগে বিএফআরআই’র মৎস্য বিজ্ঞানীরা দেশে কৃত্রিম উপায়ে পোনা উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে বেসরকারী পর্যায়ে ৭১২টি পোনা উৎপাদনকারী হ্যাচারী রয়েছে, অথচ একটিও কাঁকড়া পোনার হ্যাচারী নেই।

তিনি কাঁকড়া চাষীদের চাহিদা মোতাবেক পোনা সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সরকার খুলনার পাইকগাছায় একটি কাঁকড়া পোনা উৎপাদনকারী হ্যাচারী নির্মাণ করেছে উল্লেখ করে আরো জানান- সরকার নতুন করে সাতক্ষীরায় আরো একটি হ্যাচারী নির্মাণ করছে। ওই হ্যাচারীর নির্মাণ কাজ শেষ হলে চাষীদের পোনা নিয়ে তেমন দূর্ভাবনা থাকবে না।

মৎস্য বিজ্ঞানী ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান- একটি কাঁকড়া বিশ লাখ ডিম দেয়। কিন্তু এর শতকরা এক ভাগও বাঁচানো কঠিন। বর্তমানে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশের মৎস্য বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান।

কক্সবাজার সাগরপাড়ের লাবণী পয়েন্টস্থ মাৎস্য গবেষণা ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জুলফিকার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. আবদুর রাজ্জাক, কক্সবাজার মাৎস্য গবেষণা ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আশরাফুল হক, ড. শফিকুর রহমান, ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাকিয়া হাসান, শাহজাদ কুলি খান ও মোজাম্মেল হক প্রমূখ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।