বিডি নিউজ: 
মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য বড় অংকের তহবিলের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানাতে যাচ্ছে জাতিসংঘ।

সংস্থাটির বাংলাদেশে আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিনস বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এক্ষেত্রে বাংলাদেশ একা হয়ে যাবে না।

“আমরা বড় একটি তহবিলের অনুরোধ জানাতে চলেছি। বাংলাদেশেই আন্তর্জাতিক দাতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক আয়োজন করছি। আগামীতে সংশোধিত যে তহবিলের আনুরোধ জানানো হবে, তা অনেক বড় হবে।”

গত মাসের শেষ দিকে রোহিঙ্গারা আসতে শুরু করলে তিন লাখ শরণার্থীর জরুরি প্রয়োজন মেটাতে তিন মাসের জন্য প্রাথমিকভাবে সাত কোটি ৮০ লাখ ডলারের আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

এখন জাতিসংঘের সংস্থাগুলো মনে করছে, রাখাইন পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বছরের শেষ নাগাদ আরও পাঁচ থেকে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসতে পারে।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক বলছেন, তারা নতুন করে যে তহবিলের আহ্বান জানাবেন তা ২৫ অগাস্টের আগে ও পরে আসা রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি তাদের পাশে দাঁড়ানো স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তার কথা বিবেচনায় নিয়ে করা হবে।

রবার্ট ওয়াটকিনস রবার্ট ওয়াটকিনস শরণার্থীদের ত্রাণ কার্যক্রম যাতে ভালোভাবে পরিচালিত হয় সেজন্য বাংলাদেশে দায়িত্বের মেয়াদ এক মাস বাড়ানো হয়েছে ওয়াটকিনসের।
“নতুন তহবিল আগেরটার চারগুণ ধরে নিতে পারেন। কিন্তু তাও হবে মাত্র তিন মাসের জন্য,” বলেন তিনি।

এ পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিতে অন্তত এক বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বলে মনে করেন একজন বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ।

ওয়াটকিনস বলেন, তারা অবশ্যই বাংলাদেশকে সহায়তা করবেন।

“তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের জনগণ সাহায্য করছে। আমাদেরও তাদের সহায়তা করতে হবে, কারণ ইতোমধ্যেই তারা কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন।

“বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে আমরা আরও সহায়তা চাইতে চলেছি।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় তার সেবা ও অবকাঠামোর উপর চাপ পড়েছে।

“দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এটা অব্যাহত থাকছে। আমরা শরণার্থীদের সঙ্গে বাংলাদেশি মানুষকেও সহযোগিতা করতে চাই।”

বিভিন্ন দেশের সহায়তায় এরইমধ্যে প্রাথমিক আহ্বানের তহবিলের অর্থ উঠে আসায় দাতাদের ধন্যবাদ জানান ওয়াটকিনস।

রোহিঙ্গা সংকট ও রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির বক্তব্যে হতাশ হয়েছেন বলে জানান রবার্ট ওয়াটকিনস।

জাতির উদ্দেশে ভাষণে অং সান সু চি- ছবি: রয়টার্স জাতির উদ্দেশে ভাষণে অং সান সু চি- ছবি: রয়টার্স তিনি বলেন, “আমরা হতাশ হয়েছি। সেখানে আসলে কী ঘটছে সে বিষয়ে তার কাছ থেকে আরও স্বীকারোক্তি আশা করেছিলাম।”
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সু চি মঙ্গলবার বলেছেন, নব্বইয়ের দশকে করা প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় ‘যাচাইয়ের মাধ্যমে’ বাংলাদেশে থাকা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে তার দেশ প্রস্তুত।

কিন্তু এই শরণার্থীদের ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে স্বীকার করে না নেওয়ায় এবং তাদের ওপর সেনাবাহিনীর নির্যাতনের বিষয়টি ভাষণে এড়িয়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি সমালোচিত হচ্ছেন।