হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমার সেনাবাহিনী যখন হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম হত্যা করছে; তখন পাশের দেশের নেতা হয়ে সেই নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের প্রতি এই দরদী মনোভাবের পরিচয় দেয়ায় আবার আন্তর্জতিক পরিমন্ডলে আলোচিত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম। তাঁর নেতৃত্বের এই মানবীয় গুণাবলি সত্যিই বিশ্ব শান্তির মডেল।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘বিশেষ মতবিনিময় সভায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। তিনি আরও বলেন, যে দেশে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী নেত্রী রয়েছে, সেই দেশে আবার বর্বর হত্যাকা-! মনে ঘৃণার জন্ম নিয়েছে।
বীর বাহাদুর বলেন, সুচির নোবেল এখন শেখ হাসিনার প্রাপ্য। কারণ তিনি দৃড় নেতৃত্বে দেশকে যেমন এগিয়ে নিচ্ছেন; তেমনি বিশ্বদরবারেও দেশের ভাবমর্যাদা করছেন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি করে ইতিহাস রচনা করেছেন; ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন করে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন; এখন রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেকে বিশ্বের মানবতাবাদী রাষ্ট্রনায়কের কাতারে নিয়ে গেলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মানবদরদী এই নেত্রী নিজেকে ধীরে ধীরে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন যা ছোঁয়া অন্য নেতাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। সীমিত সাধ্যের মধ্যেও শেখ হাসিনা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের থাকা, নিরাপত্তা ও খাবার নিশ্চিত করেছেন। অথচ রোহিঙ্গাদের চাপ বহন করা বাংলাদেশের জন্য সত্যিই চ্যালেঞ্জ। তারপর রোহিঙ্গা সমস্যাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক দৃষ্টিতে দেখছেন; এ বার্তা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণ করে নাইক্ষ্যংছড়ির সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখার আহবান জানান বীর বাহাদুর।
মতবিনিময় সভায় নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্নেল মো.আনোয়ারুল আযীম বলেন, ‘সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া শত শত রোহিঙ্গারা যাতে নানা প্রান্তে মিশে যেতে না পারে সে বিষয়ে সজাগ রয়েছে বিজিবি। এসব রোহিঙ্গাকে পর্যায়ক্রমে উখিয়ার বালুখালিতে হস্তান্তর করা হবে। অবৈধ রোহিঙ্গা পাওয়া গেলেই আটক করে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমার বাহিনীকে ফেরত পাঠানো হবে। আর যারা রোহিঙ্গাদের পুঁজি করে ব্যবসা করছেন- তাঁরা সতর্ক হয়ে যান। চোরাকারবারীদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ধরা পড়লে রেহায় নেই। শিশু এবং নারী পাচারের ক্ষেত্রে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- বান্দরবান জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যসাপ্রু মার্মা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো.কামরুজ্জামান, সিভিল সার্জন অংশৈপ্রু মার্মা, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য শফিকুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রহিম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র ইসলাম বেবী, জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষিপদ দাশ, মোজাম্মেল হক বাহাদুর, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো.কামাল উদ্দিন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য ক্যউচিং চাক, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদের ট্রাস্টি অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন, নাইক্ষ্যংছড়ি মদিনাতুল উলুম মডেল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা সৈয়দ আহমদ, হেডম্যান ও মুক্তিযুদ্ধা মংশৈপ্রু চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী, দোছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো.হাবিবুল্লাহ, বাইশারি ইউপি চেয়ারম্যান মো.আলম, ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গির আজিজ এবং সোনাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বাহাইন মার্মা।
বিশেষ ওই মতবিনিময় সভায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম তৌহিদ কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আবু তাহের, সদস্য সচিব ইমরান মেম্বার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি চোচু মং মার্মাসহ পদস্থ কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নানাশ্রেণির প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।