হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়ন থেকে কক্সবাজার কিংবা ঢাকা-শহরে রপ্তানিকৃত কৃষিপণ্য থেকে চার পয়েন্টে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এ ঘটনায় শান্তিতে নেই হাজারো কৃষক। কৃষিপণ্য থেকে সংশ্লিষ্ট গর্জনিয়া ইউপি সরকারি
রাজস্ব আদায় করছে। অথচ কৃষকদের কাছ থেকে একই পণ্যের জন্য পাশ্ববর্তী গর্জনিয়া বাজার, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ এবং পার্বত্য বান্দরবান জেলা পরিষদের নাম ভাঙিয়ে ইজারাদাররা চাঁদা আদায় করছে।

গর্জনিয়া ইউপির আট নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নুরুল আলম বলেন, ‘স্ব স্ব ইউনিয়নে ইজারা নিলে- অন্য ইউনিয়নে ইজারার টাকা নেওয়ার কোন বিধান নেই। কিন্তু কচ্ছপিয়া ইউপি সেই বিধি বার বার ভঙ্গ করছে। এতে করে গর্জনিয়ার কৃষকেরা আর্থিক এবং মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।’

স্থানীয় কৃষকেরা জানায়, গর্জনিয়া অংশে কোন হাট নেই। বেঁচা কেনা হয়না। তবুও কচ্ছপিয়া ইউপির গর্জনিয়া বাজার ইজারাদারেরা ক্ষেতের পাশে গিয়ে চাঁদা আদায় করেন। গর্জনিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি-রামু সড়ক দিয়ে শশাসহ কৃষিপণ্য নানা প্রান্তে রপ্তানি হয়ে থাকে। এ কারণে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কচ্ছপিয়া ইউপির ইজারাদারসহ অন্যরা গর্জনিয়া ইউপির ইজারার রশিদ থাকলেও দাপট দেখিয়ে কৃষক থেকে টাকা আদায় করছে। টাকা না দিলে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।

বোমাংখিল গ্রামের কৃষক ওমর ফারুক (৩২) বলেন, ‘এক পিকআপ শশা রপ্তানি করতে গর্জনিয়া ইউপিকে হাজার টাকা ইজারা দেওয়ার পরও বাধ্য হয়ে কচ্ছপিয়া ইউপিকে
৮০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এর পর নাইক্ষ্যংছড়ির দুটি পয়েন্টেও টাকা দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে গর্জনিয়ার রশিদ দেখালেও কোন কাজ হচ্ছে না।’ ফারুকের মত শতাধিক কৃষকের অভিযোগ একই। তাঁরা প্রতিবাদ করেও ফল পাচ্ছেন না।

গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যায়ভাবে গর্জনিয়ার কৃষক থেকে বাকিরা চাঁদা নিচ্ছে। বিষয়টা খুবই দু:খজনক। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চাই।’

জানতে চাইলে কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু মো.ইসমাঈল নোমন স্বীকার করেছন- এক ইউপি ইজারার টাকা আদায় করলে, অন্য ইউপি নিতে পারে
না। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ওসি, তদন্ত) কাজি আরিফ উদ্দিন বলেন, কৃষকের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন।

রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনিও খুবই ব্যথিত। ঘটনার সুষ্ঠু সামাধান এবং চাঁদাবাজি বন্ধে আগামী ১৫ দিনের
মধ্যে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।