এম.বেদারুল আলম:

মানবতাবাদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ১২ সেপ্টেম্বর প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেখতে উখিয়া আসছেন। রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা শুরুর পর জীবন বাঁচােেত পালিয়ে আসা প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা আশায় বুক বেঁধে চেয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রীর দিকে। তাদের ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে , আদৌ তারা স্বদেশে ফিরে যাবেন নাকি বাংলাদেশের ঘাড়ে আবারো চাপাতে হচ্ছে রোহিঙ্গাদের এ বার্তা থাকছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর অত্যচারে গত ২৪ আগষ্ট থেকে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আগমন ঘটতে থাকে কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা উখিয়া ও টেকনাফের প্রত্যন্ত এলাকায়। ইউএনএইচসিআরের হিসাব মতে প্রায় ৩লাখ নির্যাতিত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে ধারণা করা হলেও মুলত ৫ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে সীমান্ত জনপদের বিভিন্ন পয়েন্টে আশ্রয় নিয়েছে। পালিয়ে আসা ৫ লাখ অসহায় রোহিঙ্গাদের দেখতে আজ মঙ্গলবার দেশনেত্রি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংক্ষিপ্ত সফরে উখিয়ায় আসছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারি একান্ত সচিব কাজি নিশাত রসুল স¦াক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে উখিয়া শরনার্থী ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন। সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে মায়ানমার থেকে আগত শরনার্থীদের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন এবং সীমান্তে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দুঃখ – দূর্দশার কথা শুনবেন। ১২টা ৪৫ মিনিটে কক্সবাজার সার্কিট হাউজে জেলার র্উধতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করবেন। বেলা ৩ টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করবেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে। পালিয়ে আশা রোহিঙ্গা বুচিদং এলাকার নুরুল হাকিম জানান, আমার বাবা ও ২ ভাইকে ওরা মেরে ফেলেছে ,৪টি গরু ৫ কানি জমির ধানসহ পুরো বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। প্রাণ নিয়ে আমরা ৩ জন পালিয়ে আসলেও ২ বোনকে এখনো খুঁজে পায়নি। শুনেছি শেখ হাসিনা আসছেন , আমাদের থাকার জায়গা ঠিক করার জন্য।

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলির আঘাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাচিদং এলাকার জাফর আলম ও সাথে থাকা চাচি হালিমা খাতুন জানান, আমাদের গ্রামে ৩৫টি পরিবারের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে , আমরা পালিয়ে আসার সময় ওরা গুলি করেছে। কোনমতে পালিয়ে এসে বালুখালি পর্যন্ত এসে কারা আমাদের এখানে নিয়ে এসেছে জানিনা। তবে আমার পরিবারের ৩ জনের কোন খবর নেই। শুনেছি প্রধানমন্ত্রী এখানে আমাদের দেখতে আসছে । আমাদের কোনমতে বাচাঁর সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।