হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ:
টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনছিপ্রাং রইক্ষ্যং পুটিবনিয়ায় অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে ছুটে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রইক্ষ্যং পুটিবনিয়ার এই ক্যাম্পে পানির তীব্র সংকটের পাশাপাশি বাথরুমের অভাবে যত্রতত্র খোলামেলা জায়গায় পায়খানা প্রস্রাবের ফলে দূর্গন্ধময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে বিজিবি ও কিছু এনজিও কর্তৃক সেবা প্রদান, বিশ্বখাদ্য সংস্থার হাই এনার্জি বিস্কুট প্রদান, আইওএম কতৃক ত্রিপল প্রদান ছাড়া ওয়াটার স্যানিটেশন এর কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে ক্যাম্পে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে।
এ ব্যাপারে বিজিবির মেডিকেল টিমের প্রধান টেকনাফ-২ বর্ডার গার্ডের মেডিকেল অফিসার মেজর ডাঃ মোঃ আলম জানান, ক্যাম্পে জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি ও ডায়রিয়ার রোগী বেশী। গত ৩ দিনে বিজিবির মেডিকেল টিম প্রায় ১৫০০ রোগীকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। তাদের টিমে ১৫ জন সদস্য রয়েছে।
কক্সবাজার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল টিমের সমন্বয়ক ডাঃ মন্জুরুল কাদের আহমদ জানান, তাঁরা একদিনে প্রায় ১ হাজার রোহিঙ্গাকে চিকিৎসাপত্র দিয়েছেন। গনস্বাস্থ্য কেন্দ্রর ডাঃ আরিফুল ইসলাম, ডাঃ রুগনাথ কর্মকার রোহিঙ্গাদের চিকিৎসাপত্র প্রদান করেন। গণস্বাস্থ্যের সমন্বয়ক জানান, তারা ডায়রিয়া, নিমোনিয়া, কাটাছেড়া ছাড়াও খাইরুল আমিন ও হামিদ হোছন নামক ২জন গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গাকে চিকিৎসা দিয়েছেন। আইওএম এর ৬ জন বিশিষ্ট মেডিকেল টিম এ অস্থায়ী ক্যাম্পে চিকিৎসা সেবায় হাত বাড়িয়েছে। আইওএম এর মেডিকেল অফিসার ডাঃ জিনাংশু তংচইংগ্যা, ডাঃ নিরন্তকুমার দাশ অনেক রোহিঙ্গা কে চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানান। চিকিৎসাপত্র প্রদানের পাশাপাশি আইওএম রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রিপলও বিতরণ করেন। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ওয়াল্ড ফুড) ৩ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে হাই এনার্জি বিস্কুট প্রদান করেন।
এদিকে বিজিবির উনছিপ্রাং কোম্পানী কমান্ডার জানান, রইক্ষ্যং এলাকায় আশ্রয় সন্ধানী রোহিঙ্গাদের সরকারী বনবিভাগের ২০ হেক্টর জমিতে আশ্রয় নিতে বাধা দিচ্ছে কিছু জবর দখলকারী উশৃংখল যুবক। সরকারী কর্তব্য কাজে বাধা দিয়ে তারা ভূল পথে পা বাড়াচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মানবিক বিষয় বিবেচনা না করে সরকারী জায়গা জবর দখলে রাখার পাঁয়তারা চালাচ্ছে তারা। স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল বাছেত জানান, সরকারী কাজে সরকারী জমিতে বাধা দেয়ার নৈতিক অধিকার তাদের নেই। এলাকাবাসী জানান, রোহিঙ্গা পরিবহন ও সেবার কাজে নিয়োজিতদের যাতায়ত সুবিধার্থে রইক্ষ্যং সড়ক দ্রুত চলাচল উপযোগী করা দরকার। তাছাড়া পানীয়-জলের ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য সম্মত লেট্রিনের ব্যবস্থা করা জরুরী হয়ে পড়েছে।