খালেদ হোসেন টাপু, রামু:
রামুতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে মায়ানমার সীমান্তে সংগঠিত সহিংসতার প্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ আমাদের করণীয় বিষয়ক বিশেষ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি সমুদ্র জনপদের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল বলেছেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকারের মানবিকতা রয়েছে। আমাদের দেশে আশপাশের আর কোন রাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিকতা এবং রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞের কোন প্রতিবাদ জানায়নি। এমনকি বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোও আজ পর্যন্ত মায়ানমারের এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে কোন প্রতিবাদ জানাতে এগিয়ে আসেনি।
তিনি আরো বলেন, আজ শুধু মুসলমানরা নির্যাতিত নন, হিন্দুদের ওপরও দমন, নিপীড়ন হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে মায়ানমার সরকার। মায়ানমারের মত এত লোমহর্ষক, এত বেদনাদায়ক, এত নৃশংসভাবে হত্যা করে উল্লাস করে পৃথিবীর আর কোন দেশে দেখিনি শুধু মায়ানমারেই দেখেছি। এই গণহত্যাকা-ের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার হওয়া উচিত।
তিনি আরো বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানিমূলক, ব্যাঙ্গাত্মক ও আপত্তিকর ছবি এবং মন্তব্য পোস্ট করে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। দেশ স্বাধীনের পেছনে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানসহ সব জাতির ভুমিকা রয়েছে। আমরা যার যার ধর্ম সে সে পালন করে সুখে শান্তিতে বসবাস করে আসছি। আমাদের সম্প্রীতি আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। প্রতিটি এলাকায় একটি একটি মিটিং করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তিনি রামুতে কাধে কাধ মিলিয়ে সবাইকে সম্প্রীতি রক্ষায় সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার বিকেল ৩ টায় উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বিশেষ সভায় তিনি একথা বলেন।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহজাহান আলির সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ, রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উখিয়া সার্কেল সাইলাউ মারমা, ভাইস চেয়ারম্যান আলী হোছাইন কোম্পানী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন, রামুর বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন রামু বাইপাস কেন্দ্রীয় মসজিদের খতীব মৌলানা হাফেজ আবদুল হক, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি জাফর আলম চৌধুরী, রামু থানার ওসি একেএম লিয়াকত আলী, ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম, চাকমারকুল চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা গর্জনিয়া চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, রাজারকুল আজিজুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মৌলানা মোহসেন শরীফ, খুনিয়াপালং চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ, ঈদগড় চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভুট্টো, কাউয়ারখোপ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ, জোয়ারিয়ানালা চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমদ প্রিন্স, দক্ষিণ মিঠাছড়ি চেয়ারম্যান ইউনুছ ভুট্টো, রাজারকুল চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, রশিদনগর চেয়ারম্যান এমডি শাহ আলম, কচ্ছপিয়া চেয়ারম্যান আবু ইসমাইল মো. নোমান, রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণ বড়–য়া, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক বৌদ্ধ নেতা নীতিশ বড়ুয়া, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ রামু শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নীলোৎপল বড়–য়া, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার সাইফুদ্দিন খালেদ।
উপস্থিত ছিলেন রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের আবাসিক পরিচালক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু, জেলা যুবলীগ নেতা, বৌদ্ধ নেতা পলক বড়–য়া আপ্পু, রামু প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আমির হোসেন হেলালী, বৌদ্ধ নেতা দুলাল বড়–য়া, রাজারকুল বিহার অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা রমেশ বড়–য়া, হাকিম রহিমা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিশোর বড়–য়া, মৌলানা মো. উল্লাহ নকশবন্দী, মৌলানা শরিফুল হক, মৌলানা আবদু ছালাম কুদছী, মৌলানা হাফেজ আবুল মঞ্জুর, মৌলানা নুরুল হাকিম, জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল হক কোম্পানী, জোয়ারিয়ানালা এইচএম সাঁচি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক সিকদার, জারাইলতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসাইনুল মাতব্বর, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা ফরিদুল আলম, সাংবাদিক খালেদ শহীদ, খালেদ হোসেন টাপু, ভাবনা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক শিপন বড়–য়া, হিন্দু নেতা প্রকাশ সিকদারসহ আলেম ওলামা, রাজনৈতিক, বৌদ্ধ ভিক্ষু, পুরোহিত, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও স্ব স্ব এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।