প্রথম আলো:

বাংলাদেশে গত আট দিনে মিয়ানমার থেকে প্রায় ৬০ হাজার শরণার্থী এসেছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর শনিবার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। এসব শরণার্থীর মধ্যে প্রায় সবাই রোহিঙ্গা মুসলিম বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাটি। মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে এসব মানুষ পালিয়ে এসেছে বলে জানায় ইউএনএইচসিআর।


মংদুতে পুড়িয়ে দেওয়া ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপ। ছবিটি ৩১ আগস্ট তোলা। ছবি: রয়টার্স

ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ভিভয়ান ট্যান বলেন, এ পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আসা মানুষের আনুমানিক সংখ্যা ৫৮ হাজার ৬০০। এ সংখ্যা ক্রমে বাড়ছেই।
ইউএনএইচসিআরের ঢাকা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে শনিবার রাতে বলেন, ‘আমরা যে সংখ্যা বলছি, তা অনুমিত। সীমান্ত এলাকায় কাজ করা বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।’পুড়িয়ে দেওয়া থেকে রেহাই পায়নি এই গাড়িটিও। ছবিটি ৩১ আগস্ট তোলা। ছবি: রয়টার্স

গত ৩১ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সীমান্তবর্তী কয়েকটি চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চৌকি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব এক তদন্ত প্রতিবেদন দেন। ওই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, এ হামলার জন্য মিয়ানমারের সরকার স্থানীয় আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মিকে (এআরএসএ-আরসা) দায়ী করে। এরপর থেকে রোহিঙ্গা জনপদ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটতে থাকে। রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যার অভিযোগও করেছেন বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অনেক রোহিঙ্গা।
এ অঞ্চলের অমুসলিম নাগরিকদের ভাষ্য, এ পর্যন্ত আরাকানে অন্তত ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। ১১ হাজার ৭০০ ‘জাতিগত অধিবাসী’ তাদের বাসস্থান ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার উপগ্রহ চিত্র পাওয়া গেছে।