আব্দুর রশিদ, বাইশারী:

নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা-আশারতলী-রেজু-বাইশপাড়ি-তুমরু ও ঘুমধুম সহ স্থল সীমান্তের ৬১ কিলো মিটার এলাকার জিরো পয়েন্টে শতশত রোহিঙ্গা খোলা আকাশের নিচে। সাথে নিজেদের লালিত গরু-ছাগল, হাস-মুরগি নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। অনাহারে অর্ধাহারে অসংখ্য শিশুর করুন জীবন-যাপনে মানবিক বির্পযয় দেখা দিয়েছে। এ জটিল পরিস্থিতিেিত বান্দরবান জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বনিক রোহিঙ্গাদের মানবিক আচরন দেখাতে স্থানীয় নাগবিকদের আহবান জানান ।

অপর দিকে বিজিবি ও পুলিশ জানান,মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ক্রয়করা অন্তত ৫১ টি গরু এবং ২ ব্যবসায়ীকে তারা আটক করে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট লোকজন ছাড়া বিনা প্রযোজনে কেউ সীমান্ত এলাকায় যাতায়াত করলে তাদেরকে গুলি করা হবে । বিশেষ ক্ষেত্রে গ্রেপ্তারেরও ঘোষনা দেন প্রশাসন।

৩০ আগষ্ট বুধবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সভায় এ ঘোষনা দেন তিনি। এর আগে মিয়ানমার সীমান্তে আইন-শ,ৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর ছুটি বাতিল করেছে সরকার। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বার্হী অফিসার এসএম সরওয়ার কামালের সভাপতিত্বে রোহিঙ্গা বিষয়ক এ বিশেষ মতবিনিময় সভায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক আরো বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদেরকে মানবিক আচরন দেখাতে বলেছেন। তাদের বিষয়ে সজাগ খাকতেও বলেছেন সংশ্লিষ্টদের। প্রশাসন এ কারনে অগ্রধিকারের ভিত্তিতে

এ বিষয়টি আমলে নিয়েছেন। তিনি এ সময় বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যলয় র্সাবক্ষণিক খোলা থাকবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার,এলজিইডি ও পিআইও কর্মকতাসহ অফিসে কর্মরতদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, এর আগে বিজিবি’র ছুটি বাতিল করেছে সরকার। কেননা সীমান্ত পরিস্থিতি ভয়াবহ।

নাইক্ষ্যংছড়িস্থ ৩১ বিজিবি অধিনায়ক ও ককসবাজার সেক্টরের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার লে: কমান্ডার আনোয়ারুল আজিম বলেন,সীমান্তের প্রায় ৬১ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত পয়েন্টে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে জিরো পয়েন্টে। তিনি বলেন,আর্ন্তজাতিক বিধি অনুসারে ঊভয় দেশের ৫ শ’ গজের সীমান্ত জিরো পয়েন্টে কোন রাষ্ট হস্তক্ষেপ করে না । এ পয়েন্টেই এসব রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। যাদের সংখ্যা ৫ হাজার থেকে ২০ হাজারও হতে পারে বা কম-বেশীও হতে পারে। কেননা এটা গহীন পাহাড়ি দূর্গম এলাকা। তাই প্রকৃত হিসাব বের করা মুশকিল। তিনি আরো বলেন, সীমান্তে গেলে পাহাড়ি চুড়া থেকে মিয়ানমার অংশে ঘর-বাড়ি পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু এসব কাদের বাড়ি-ঘর বলা মুশকিল। তবে পুড়ছে। আর দলে দলে রোহিঙ্গারা সীমান্তে জড়ো হচ্ছে। এ থেকে বুঝা যায় সেখানে কিছু একটা হচ্ছে। সে কারনেই মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদেরকে পুশব্যাক করে বির্পযয়ের মধ্যে ঠেলে না বিজিবি।

বিজিবি কমান্ডার লে: কর্ণেল আনোয়ারুল আজিম সীমান্তের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে আরো বলেন,গত মঙ্গলবার রাতে নাইক্ষ্যংছড়ির আশারতলী,চাকঢালা,কচ্ছপিয়া ও অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে বিজিবি জেয়ানরা ৩১ টি গরু আটক। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সভায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক সঞ্জিত কুমার রায়,উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন,নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদ কবির,বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য ক্যাউচিং চাক,এমপি প্রতিনিধি আলহাজ্ব খাইরুল বশর,উপজেলা হাসপাতালের টিএইচও,উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান বৃন্দ,সাংবাদিক,হেডম্যান ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।