নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক মোহরাকাটায় স্বামীর নিষ্ঠুর আঘাতে নিহত গৃহবধূ হাসিনা আকতার হত্যার মামলা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাদিপক্ষ। এই হত্যায় হাসিনার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ি আরো লোকজন জড়িত থাকলেও থানায় শুধু স্বামী মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বাকী অভিযুক্তদের আসামী না করায় এই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
হাসিনার বাবা জাকির হোসেন জানান, হাসিনা হত্যার সাথে শুধু স্বামী মোস্তফা কামাল নয়; শ্বশুর-শ্বাশুড়িসহ তাদের পরিবারের অন্যান্যরাও জড়িত। মোস্তফা কামাল হাসিনাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ঠিক। তবে হত্যার পরিকল্পনায় ছিলো শ্বশুর-শ্বাশুড়িসহ অন্যান্যরা। অন্য সবাই পরিকল্পিতভাবে হাসিনাকে হত্যা করিয়েছে।
তিনি আরো জানান, হাসিনার হত্যায় মহেশখালী থানায় শুধু মাত্র স্বামী মোস্তফা কামালকে আসামী মামলা হয়েছে। হাসিনার মা এলমুন নাহার বাদি হয়ে মামলা করেছে। তবে এজাহার লিখেছে পুলিশ। বাদি সব আসামীর নাম বললেও পুলিশ শুধু স্বামীকে আসামীকে অন্যদের বাদ দিয়েছে। এজাহারে কৌশলে বাদির দস্তখত নেয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
পূর্ব ঘটনার বিবরণ দিয়ে হাসিনার বাবা জাকির হোসেন জানান, একই ইউনিয়নের কালালিয়াকাটা এলাকার লাল মোহাম্মদ প্রকাশ লালুর পুত্র মোস্তফা কামালের সাথে ১০ বছর আগে হাসিনার আকতারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুটি সন্তানও রয়েছে। বিগত চার বছর ধরে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের দাবিতে হাসিনাকে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এরই মধ্যে ইয়াবা ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িয়ে পড়ে স্বামী মোস্তফা কামাল। বেশ কিছুদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা করার জন্য বাপের বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা এনে দিতে হাসিনাকে চাপ দেয় মোস্তফা কামাল। এই নিয়ে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসিনাকে দফায় দফায় শারীরিক নির্যাতন করে। এর মধ্যে মৃত্যুর ২২ দিন আগে হাসিনা ও তার স্বামীকে বাড়িতে পৃথক করে শ্বশু-শ্বাশুড়ি। তারপরও নির্যাতন করতে থাকে স্বামী। এতে অতিষ্ঠ হয়ে বাপের বাড়ি চলে যায় হাসিনা। মৃত্যুর ১০/১২ দিন আগে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির অন্যরা গিয়ে আর নির্যাতন করবে না মর্মে হাসিনাকে নিয়ে আসে। কিন্তু তারপরও নির্যাতন অব্যাহত রাখে। মৃত্যুর দুদিন আগে থেকে স্বামী ও হাসিনার মধ্যে গ-গোল শুরু হয়। বিষয়টি মৃত্যুর আগের রাতে মোবাইলের মাকে জানায় হাসিনা। মা সকালে যাবে বলে জানায়। মা এলমুন নাহার সকালে গিয়ে হাসিনার মৃতদেহ দেখতে পায়। তিনি দেখেন, হাসিনার সারা শরীর গাছের আঘাত রয়েছে। মৃত্যুকালে হাসিনা ৭ মাসের অন্ত:সত্ত্বা ছিলেন।
হাসিনার বাবা বলেন, ২লাখ টাকার দাবিতে আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্বামী। হত্যা করে লাশ চালের সাথে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে। তবে হত্যার ইন্ধন ও পরিকল্পনায় তাদের পুরো পরিবার রয়েছে। সবাই মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যাকারী সবার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। বিচার পেতে আমি আদালতে মামলা দায়ের করবো।
হোয়ানকের গৃহবধূ হাসিনা হত্যামামলা নিয়ে অসন্তোষ
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে