পূর্বপশ্চিম:
আজ প্রায় ৬ বছর হল আমার বিয়ে হয়েছে। আমার মা নেই। ভেবেছিলাম শাশুড়িকে মায়ের মত দেখব। কিন্তু কিভাবে?
উফফফ! বিরক্ত আমি! শাশুড়ির যন্ত্রণায়!
বিয়ের পর থেকেই শুধু আমার ভুল ধরেই যাচ্ছেন। আমি যতই ভাল কাজ করি না কেন উনার পছন্দ হয় না।
সারাটা দিন আমার পেছনে লেগে থাকেন।
প্রথম প্রথম আমি চুপ করে থাকতাম। পরে আমিও শুরু করলাম। সারাটাদিন ঘরে অশান্তি। আমার স্বামী আমাদের উপর চরম রাগ। সে বাসায় এসে শান্তি পায় না।
তাই যতক্ষণ পারে বাইরে সময় কাটায়। কার ভাল্লাগে এইসব।আমি উপায় না দেখে আমার এক চাচার কাছে গেলাম।
আমার চাচা একজন গবেষক কাম বিজ্ঞানী। তাকে সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম। আর বললাম ইচ্ছা করে “শাশুড়িকে মেরে ফেলি”।
চাচা বললেন, এভাবে সরাসরি মারলে তুইত বাঁচতে পারবি না। এর চেয়ে আস্তে আস্তে মার।
এই বলে আমাকে এক টিন পাউডার দিলেন। আর বললেন, এই পাউডার প্রতিবেলায় এক চামচ করে তোর শাশুড়ির খাবারের মধ্যে মিশিয়ে দিবি। বেশি দিলে তো ধুম করে মরে যাবে। তখন আরেক ক্যাচাল। তাই আস্তে আস্তে উনারে মার। আর তুই অবশ্যই ভাল ব্যাবহার করবি। কোনভাবেই খারাপ ব্যাবহার করবি না। যত যাই করুক না কেন ওই মহিলা।
আমি খুশি মনে ফিরে এলাম।প্রতিদিন শাশুড়িকে পাউডার খাওয়াতে লাগলাম। চাচার কথামত কখনই বেশি দিতাম না। যদি ধুম করে মরে যায়।
শাশুড়ি আরও খারাপ ব্যবহার করে আমি আর বেশি ভাল ব্যবহার করি। অনেক রাগ লাগে কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করি। কোনভাবেই তার সাথে তর্ক করি না যা করতে বলে তাই করি। এভাবে দিন যায় মাস যায়। শাশুড়ির প্রতি আমার আর রাগ হয় না।
নিজের প্রতি আমার অসম্ভব নিয়ন্ত্রণ আর সব কিছুতে অসম্ভব ধৈর্য্য দেখে আমি নিজেই অবাক।
এদিকে আমার শাশুড়িও পরিবর্তন হয়ে গেছেন। আমার পেছনে আর লেগে থাকেন না। কোন কাজে ভুল হলে কিছু বলেন না।
আমার স্বামী আমাকে কোন কারনে বকাঝকা করলে উনি সামনে এসে দাঁড়ান। বাসায় কেউ আসলে আমার প্রশংসা করেন আর বলেন, বউটাকে কত বকি, বউটা একটু তর্ক করে না।
আর আমার উপরে সে তো কোন কথাই বলে না। মেয়েটা সত্যি অনেক লক্ষ্মী। এরি মাঝে আমি শাশুড়িকে পাউডার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি এবং চাচার কাছে গিয়ে কান্না জুড়ে দিলাম।
যে পাউডার শাশুড়িকে দিয়েছি তা শরীর থেকে কিভাবে বের করা যায়। আমি আমার মায়ের মত শ্বাশুড়িকে মারতে চাই না। যা করেছি আমি না বুঝে করেছি। আমার শাশুড়ি খুব ভাল মানুষ।
আমার চাচা হাসলেন। আর বললেন, ওইটা কোন খারাপ পাউডার না আর কোন বিষও না। ওইটা ভিটামিন।
আসলে বিষ হল আমাদের মন। মনটাকে পরিবর্তন করো শান্তি পাবে। আমি আমার মন পরিবর্তন করেছি। আমি আর আমার শাশুড়ি এখন বন্ধুর মত।
আমার স্বামীও এখন অনেক খুশি। অফিস শেষ করে সোজা বাসায় চলে আসে। আমরা এখন অনেক সুখী।
( ফেসবুক থেকে সংগৃহীত। চীনা গল্প অবলম্বনে।)
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।