বিশেষ প্রতিবেদক:
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের একটি মামলার তদন্তের শুনানীতে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে আসা দুই ব্যক্তিকে কোন গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় চলছে।
সোমবার বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ের কম্পাউন্ড থেকে মনিয়া ও রিয়াজ উদ্দিন নামের ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে যান কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আখতারুজ্জামান।
থানার চিহ্নিত দালাল লাল মোহাম্মদ পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আটক করান বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ঘটনার আধা ঘন্টার মধ্যেই সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সদর থানার ওসির হস্তক্ষেপে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। পরে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে তদন্ত শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে সহকারী কমিশনারের নোটিশে হাজির হওয়া ব্যক্তিদের তার অগোচরে কোন গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই আটক করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মহলে তোলপাড় চলছে। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ঘটনাটির বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে তৎপর হয়ে উঠে।
আটক অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নিয়মিত মামলার আসামী হিসেবে ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছিল। এখনো তারা থানায় আটক আছেন।’ তাদের বিরুদ্ধে কোন নিয়মিত মামলা নেই এবং তাদের দুপুরেই ছেড়ে দেয়া হয় উল্লেখ করা হলে তিনি এ বিষয়ে আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, ‘একটি মামলার তদন্তে উভয়পক্ষকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ নিয়মিত মামলার কথা বলে এক পক্ষের দুই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যায়। পরে আমি তাদের ছাড়িয়ে এনে তদন্ত শুনানীর কাজ সম্পন্ন করি। তবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে কিনা তা পুলিশই ভাল বলতে পারবে।’
ঘটনার বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রণজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের থানায় আনা হয়েছিল। পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজার পশ্চিম লারপাড়ার মনছুর আলমের পুত্র মনিয়া ও নুরুল ইসলামের পুত্র রাহমত এর বিরুদ্ধে একই এলাকার মোহাম্মদ হোছাইনের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম বাদি হয়ে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) তদন্তের দায়িত্ব দেন।
সহকারি কমিশনার ২১ আগষ্ট সকাল ১০ টায় সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ হাজির হতে উভয় পক্ষকে নোটিশ ইস্যু করেন। যথারীতি উভয়পক্ষই গতকাল সহকারি কমিশনারের কার্যালয়ে হাজির হন। কিন্তু বেলা ১২টার দিকে থানার চিহ্নিত দালাল লাল মোহাম্মদের নেতৃত্বে বাদি পক্ষের লোকজন পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মনিয়া ও রিয়াজ উদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটকের সময় দালাল লাল মোহাম্মদ, সাগর, কোরবান আলী, কবির আহমদসহ কয়েক ব্যক্তি মনিয়া ও রিয়াজকে লাঞ্চিত করে বলে অভিযোগ করেন ভ্ক্তূভোগীরা।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন সদর থানার উপ-পরিদর্শক আখতারুজ্জামান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক শামীমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল।