সিবিএন ডেস্ক:
বাংলাদেশে পাসপোর্ট সেবা গ্রহণ করতে গিয়ে শতকরা ৫৫.২ ভাগ সেবাগ্রহীতা অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিআইবি পরিচালিত ‘পাসপোর্ট সেবায় সুশাসন: চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
গত ৮ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত সেবাগ্রহীতাদের ওপর জরিপ করা হয় এবং সেপ্টেম্বর ২০১৬ থেকে মে ২০১৭ এর মধ্যে গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়।
টিআইবি’র গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপ চলাকালে সেবাগ্রহীতাদের ৫৫.২ ভাগ পাসপোর্ট সেবা (আবেদনপত্র উত্তোলন, আবেদনপত্র জমাদান ও প্রি-এনরোলমেন্ট, বায়ো-এনরোলমেন্ট, পাসপোর্ট বিতরণ ও দালালের সঙ্গে চুক্তি) নিতে অনিয়ম, হয়রানি ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। অনিয়ম হয়রানি ও দুর্নীতির ধরন বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়, সেবাগ্রহীতাদের ৩৫.৩ ভাগ নিয়ম বহির্ভূত অর্থ দেওয়া, ২৭ ভাগ সময়ক্ষেপণ, ২.৩ ভাগ দায়িত্ব পালনে অবহেলা এবং ০.২ ভাগ আত্মসাৎ ও প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এছাড়া পাসপোর্ট অফিসের সেবায় ঘুষ বা নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ দেওয়ার গড় পরিমাণ ২ হাজার ২২১ টাকা। পাসপোর্ট সেবায় শুধুমাত্র পুলিশী তদন্তে (নতুন পাসপোর্টের আবেদন) সেবাগ্রহীতারা ৭৬.২ ভাগ অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।৭৫.৩ ভাগ সেবগ্রহীতাকে ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ দিতে হয়েছে। ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ হিসাবে গড়ে ৭৯৭ টাকা দিতে হয়েছে বলে টিআইবি’র গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
টিআইবিএর আগে ২০১৪-১৫ সালে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ-২০১৫’ শীর্ষক জরিপে পাসপোর্ট সেবা সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেবাখাতের মধ্যে পাসপোর্ট সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে ৭৭.৭ ভাগ অনিয়ম, হয়রানি ও দুর্নীতির শিকার হন। একই সঙ্গে ৭৬.১ ভাগ ঘুষ বা নিয়ম বহির্ভূত অর্থ প্রদান করে থাকেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তবে পাসপোর্ট সেবা জনমুখী ও সহজ করার জন্য সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপগুলো অনেকক্ষেত্রেই টিআইবি’র ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০১৫’ শীর্ষক জরিপের সুপারিশমালার সঙ্গে মিল রয়েছে বলে জানায় টিআইবি।
‘পাসপোর্ট সেবায় সুশাসন: চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি ও উপস্থাপন করেন টিআইবি’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পরিসি) মো. শাহনূর রহমান। গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সদস্য এম. হাফিজউদ্দিন খানসহ টিআইবি’র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।