সেলিম উদ্দিন :

কক্সবাজার জেলার স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ খুটাখালী কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেক শিক্ষানুরাগীদের বলতে শুনেছি প্রতিষ্ঠান নিয়ে এসব মানায় না। এসবের কারণে প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাবে। সমাজে একটা কথা হামেশা বলতে শুনি। ‘বাইরে ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট’ এ ফিটফাট-সদরঘাট অবস্থাতো স্কুলের হয়নি। যদি হয়ে থাকে এর আঁড়ালে স্কুল দরদী-শুভাকাংখীরা কি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাই। তাহলে বুঝতে বাকী রইল না কেন তাদের এত দরদ। যারা আজকের কিশলয় নিয়ে এত মাতামাতি-ঘাটাঘাটি করছেন তাদের হয়ত একটা মহৎ উদ্দেশ্য আছে? উদ্দেশ্যটা কি! দয়া করে কিশলয় স্কুলকে বলির পাঠা বানাবেন না। স্কুলের বিরুদ্বে পত্রিকা-ফেইজবুকে মন্তব্য দেখলেই স্কুলের মান-ইজ্জত, লেখা-পড়া সব কিছু নষ্ট হচ্ছে মনে করেন। যারা এসব কথা বলে বেড়ান তাদেরকে বলি ‘নীতি কথা বাদ দিন, সমস্যার সমাধান দিন’। কক্সবাজার জেলার গৌরব কিশলয়। খুটাখালীর অহংকার কিশলয়। সর্বপরি ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়ার ঠিকানা কিশলয়। নিন্দুকের কথা না শুনে ষড়যন্ত্রকারীরা যতই ষড়যন্ত্র করুক সকলের সহযোগিতায় এ চক্রান্ত ধূলিসাৎ হবে। সময় হয়েছে এক্ষুনি এগিয়ে আসার, কারা কি করলো, কি না করলো এসব দেখার দরকার নেই। যারা নিজেদের শুধু ফ্রেস ও ভাল মানুষ মনে করেন তাদেরও প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন শুধু ভাল মনের কয়েক জন অভিভাবক। সম্মিলিতভাবে তারাই করতে পারবে ষড়যন্ত্রকারীদের হঠিয়ে কিশলয় বাঁচাও আন্দোলন। আসলে কিশলয় নিয়ে এসব কি হচ্ছে। লেখা-পড়ার নামে যারা এ বিভক্তি সৃষ্টি করেছেন তারা কি সহজে এ থেকে রেহায় পাবেন? জ্বি না! যাদের কারণে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার বিঘœ ঘটছে তাদের ছাড় দেয়া যাবে না। যারা নিন্দুক তারা হয়ত এত দোষ খুঁজেন। এ সমাজে তাদের কাজ সম্ভবত এটাই। তাদের উদ্দেশ্য বলি ”খাছিয়ত গম ন নছিয়ত গরি মছিবত ন লইঅ”।

সাম্প্রতিক সময়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিয়ে বিভিন্ন অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে চলছে কল্পকাহিনী। চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। এসবকে পুঁজি করে এক শ্রেণীর ষড়যন্ত্রকারী এলাকায় তুলপাড় সৃষ্টি করছে। কেনইবা তারা একটি স্কুল নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে তা কারো বোধগম্য না হলেও স্পষ্ট হয়েছে স্কুল কমিটির নির্বাচন নিয়ে তাদের অপপ্রচারের হাকঁডাক। যা শিক্ষিত সমাজকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ সমাজের কিছু ফায়দালোভী স্কুলের চলমান কার্যক্রমে বার বার বাঁধাগ্রস্থ করছে। তাদের এহেন কর্মকান্ডে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে আসলে এরা কি চাই! এরা কারা? কেন তারা খুটাখালীতে এত স্কুল থাকতে শুধু কিশলয় স্কুল নিয়ে মাথা ঘামায়। তাদের উদ্দেশ্য কি? তারা কিশলয় স্কুলের প্রতিষ্টাতা আলহাজ্ব চৌধুরী মুহাম্মদ তৈয়ব হুজুরকে বিতাড়িত করে তাঁর স্মৃতি বিজড়িত প্রতিষ্টানের চিহ্ন কি মুছে ফেলার চক্রান্ত করছে ?

এসব প্রশ্নের উত্তর আজ সবার জানা। তারপরেও বলতে শুনা যায় স্কুলের লেখাপড়ার মান খারাপ। শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়ে বির্তক, কমিটি অযোগ্য। তাহলে প্রশাসন এসবের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? প্রতি বছর পিএসসি,জেএসসি,এসএসসিতে এত জিপিএ,এ প্লাস পায় কিভাবে? দেড় হাজার শিক্ষার্থীদের অভিভাবক কি কিছুই জানেন না। ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যত নিয়ে কি কারো চিন্তা নাই। থাকলে লেখা পড়ায় যারা ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কোন মতলবে।

খুঁজে বের করতে হবে তাদের খুটির জোর কোথায়? তাদের পেছনে কারা নাড়ছে কলকাঠি। কুকুরে উপর বিড়াল,বিড়ালের উপর কুকুর তুলে দেয়া যাদের স্বভাব এরা কি তারা না তাদের প্রেত্তাত্বা? তাদের মুখোশ উম্মোচন করা সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। উদ্দেশ্য যদি সৎ থাকে সফলতা আসবেই এটিই যেমন চিরন্তন সত্য,তেমনি যারা পিছন দিক দিয়ে এসব ষড়যন্ত্র করছে তাদের পরাজয় (বেইলশেষ) নিশ্চিত।

তাদের উদ্দেশ্যে কটি প্রশ্ন: কিশলয় স্কুল প্রতিষ্টার পর থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও ক্রীড়া শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি কেন? এযাবত যে সমস্ত শিক্ষক অবসর নিয়েছেন তাদের বিদায় সংবর্ধনা কেন দেয়া হয়নি? যারা অকালে মারা গেছেন তাদের শোক সভা করা হয়েছি কি? কার ইশারায় কার ইন্দনে প্রতিষ্টাতা আলহাজ্ব চৌধুরী মুহাম্মদ তৈয়ব হুজুরকে বহিষ্কার করা হয়েছে? কেন দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত প্রধান শিক্ষকদের নামের তালিকা টাঙানো হয়নি? স্কুল বাস বিক্রির টাকা কার পকেটে? ছাত্র ছাত্রীদের ইউনিফরম আছে, সালাম আদব-লেহাছ গেল কই? শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনে ধুমপান করে,দে জাত তুলে গালাগাল। তাঁরা নাকি মানুষ গড়ার কারিগর! সরকারী বেসরকারী বেতন নিয়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে তাঁরা এখন ধোয়া তুলসী পাতা। তাঁরা উনিশ বিশ (ভাগবাটোয়ারা) কম হলে করে ক্লাস বর্জন। এসব তাদের অধিকার। এসবের সুরাহা কি কখনো হবেনা?

কমিটি-শিক্ষক-অভিভাবকদের মাঝে দুরত্ব কিসের ইঙিত বহন করে। কারা তিলকে তাল বানাই, কোথাও একটা ক শদ্ব দেখলে কিশলয় কমিটি ভাবে তাদের ঘোর কাটবে কখন?

লেখক: প্রাক্তন ছাত্র ও অভিভাবক প্রতিনিধি ।