হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। যা শুধু দেশ নয়, বিশ্বময় বেশ পরিচিত। আর সেই ফেসবুক জুড়েই অকাল প্রয়াত ছাত্রলীগ নেতা রিফাতের জন্য শোকগাঁথা অব্যাহত রয়েছে। নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন সমবেদনার সাথে শোক প্রকাশ করছেন জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও রামুর ত্যাগী ছাত্রলীগ নেতা হোসাইন মাহমুদ রিফাতের মৃত্যুর পর থেকে। বিশেষ করে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা ফেসবুক প্রোফাইলে নিজেদের ছবি পরিবর্তন করে রিফাতের ছবি ব্যাবহার করছেন। অনেকে আবার ফেসবুকে তাঁকে নিয়ে লিখেছেন,
স্মৃতিচারন করছেন ফেলে আসা দিনগুলোর। এক কথায় ফেসবুকে ঢুকলেই রিফাতের ছবি ও স্মৃতিকথা চোখে পড়ছে।
রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের সহকারি পরিচালক ও আমাদের রামু ডটকমের সম্পাদক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু ফেসবুকে রিফাতকে নিয়ে এক পর্যায়ে
লিখেছেন-‘রামুতে ছাত্র রাজনীতিতে দিনে দিনে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল সে। রিফাতরা এভাবে চলে যায় বলে আজ তারুণ্যের বিপুল সম্ভবনাময় রাজনীতি খুব ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং নষ্টদের হাতে চলে যাওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হয়। অথচ রিফাতদের মত স্বপ্নবান, ভদ্র, ন¤্র তরুণ আমাদের রাজনীতি এবং সমাজের জন্য খুব বেশি দরকার।’
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোরশেদ হোসাইন তানিম ফেসবুকে লিখেছেন-শোক প্রকাশ করার মতো ভাষা নেই। হঠাৎ রিফাতের মৃত্যুর সংবাদ শুনে বুকের ভেতরটা যেন কেঁপে উঠলো। দুদিন আগে তাঁর সাথে বসে খাবার খেয়েছি, সুখ দুঃখের অনেক কথা বলেছি। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর জন্য আমাকে, তার উপস্থিতিতে এক প্রিয় দাদা তাঁকে রাজনৈতিকভাবে দেখভাল করার জন্য অনুরোধ জানালো। আর আজ সে নেই। ভাবতেও অবাক লাগছে-কান্না পাচ্ছে।
রামু উপজেলা ছাত্রলীগের অভিভাবক আমজাদ আলী খাঁন রিফাতকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন-‘এভাবে হাসালি কেন ভাই। পুরো রামুকে কাঁদিয়ে। এই জনপদে তোর মত স্পষ্ট সম্ভাবনা আর কেও নাই।’
রামুর সিনিয়র সাংবাদিক সোয়েব সাঈদ লিখেছেন-মূলত রিফাত দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে সবার কাছে হয়েছেন প্রিয়ভাজন। সমালোচনা বা কোন অপবাদ তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। বরং সদা হাস্যোজ্বল রিফাতের সততা, বিনয়ী স্বভাব ছিলো সবার কাছে অতি চেনা। বন্যাদূর্গত, শীতার্ত ও অসহায় মানুষেরও সহায় ছিলেন রিফাত। সাম্প্রতিক বন্যায় ছুটে গিয়েছিলেন প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে। অন্যের স্বপ্ন পূরণের বাসনায় নিজেকে বিলিয়ে দেয়া এ ছাত্রনেতা নিজের স্বপ্ন পূরণের আগেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। বৃহষ্পতিবার ভোরে শোকাবহ এ সংবাদটি শুনেই ঘুম ভাঙ্গে রিফাতের সহকর্মী, সহপাঠি ও পরিচিতজনদের। মাত্র ২৫ বছর বয়সী এ ছাত্রনেতার আকস্মিক
মৃত্যুর খবর মুঠোফোন ও ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে নানাপ্রান্তে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ভোর পৌনে চারটায় রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের শ্রীকূল গ্রামের নিজ বাড়িতে ঘুম থেকে জেগে হঠাৎ বমি করেন রিফাত। এর পরই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ২৬ বছর। রিফাতের বাবার নাম সৈয়দ আহমদ। তিনি আমেরিকা প্রবাসী। মা খতিজা বেগম এবং এক মাত্র ছোট ভাই হাসান মাহমুদ আরফাতও বাবার সঙ্গে আমেরিকায় থাকেন। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে দেশে ছুটে এসেছেন মা খতিজা বেগম। ১৯ আগষ্ট (শনিবার) বিকেল সাড়ে ৫টায় রামু খিজারি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মরহুমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।