দিগন্ত দিলদার :

বিদেশে বসে সাংবাদিক নামধারী এক শ্রেণির স্বাধীনতা বিরোধী ব্যক্তি বিশেষের বর্তমান সরকারে বিরুদ্ধে সীমাহীন অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেশ প্রেমিক মহল দাবী জানিয়েছেন।

ইউরোপ ও আমেরিকায় বসে কথিত এসব সাংবাদিকরা লেখালেখির স্বাধীনতাকে মারাত্মক ভাবে অপব্যবহার করছেন। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের কয়েকটি সিটিতে বসে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে এরা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। লন্ডন, মানচেষ্টার, লিভারপুল, সান্ডারল্যান্ড, ডার্বিসায়ার,বার্মিংহাম ইত্যাদি সিটিতে বসে এসব কুচক্রি মহল তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।

১৯৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বরের পর থেকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী স্বাধীনতা বিরোধী চৌধুরী মাঈন উদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান সহ রাজাকার আলবদরদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতা দেশ থেকে পালিয়ে ইংল্যান্ড চলে যায়। তারা সেখানকার ‘চ্যানেল ফোর’ সহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, সাংবাদপত্র ও পাবলিক মিডিয়াতে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারনা চালায়। বর্তমানে তাদের অনুসারী নতুন প্রজন্মও এই ধারা অব্যাহত রেখেছে।

এমনি এক সাংবাদিকের নাম ইকবাল হোসেন। তিনি ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে অবস্থান করেন। তিনি সেখানকার বিভিন্ন অনলাইন পেপার, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও ফেসবুকে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার মূলক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। তার দৃষ্টিতে “বাংলাদেশে সন্ত্রাস শুরু হয়েছে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। তখন সরকারী নিয়মিত সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান আর্মির বিরুদ্ধে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী নামধারী একটি সন্ত্রাসী গোষ্টি প্রকাশ্যে অস্ত্র ধারণ করার মাধ্যমে এদেশে সন্ত্রাসের সূচনা করে।”

ইকবাল হোসেন অনলাইন টিভি ও ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, আওয়ামীলীগ ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এত অশালীন অপপ্রচার চালাচ্ছেন যা ভাষায় বর্ণনা করার মত নয়। তিনি ১৫ আগষ্ট ‘শোক’ দিবসকে নিয়ে ‘সুখের মাস’ নামে একটা  ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে  বঙ্গবন্ধুকে ছোট করে  মেজর ডালিমের বই এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন “মুজিব বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট জাতি ১৫ আগষ্টের মত একটি পরিবর্তনের জন্য প্রার্থনা করেছিল এবং মুজিবের মৃত্যুতে মিষ্টি বিতরণ করে আনন্দ উল্লাস করেছিল (৫ আগষ্ট-১৭)। ”তিনি জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বড় নেতা হিসাবে তুলে ধরার অপচেষ্টা করেছেন।

ইকবাল হোসেন ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী এক পোষ্টে বলেন “ বাংলাদেশ এখন দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে দেশের জনগন আর অন্যদিকে আওয়ামীলীগ। আওয়ামীলীগ এখন দেশের সকল সংবাদপত্রকে পেপারলীগে পরিণত করেছে।”

এর আগে এক ফেসবুক পোষ্টে “৫ই জানুয়ারীর ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল”নামে রূপক ধর্মী রম্য রচনায় তিনি বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী, বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম, ভারতীয় ক্রিকেট টিম, মাহেন্দ্র সিংধোনি, আইসিসি সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তুলোধুনো করেন। এতে শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর কার্টুনও ব্যবহার করেন।

২০১৫ সালের ৪ ডিসেম্বর এক পোষ্টে ইকবাল হোসেন বিখ্যাত সাময়িকি ‘ফরেনপলিসি’র ১০০ চিন্তাবিদের তালিকায় শেখ হাসিনার নাম দেখে এটিকে অষ্টম আশ্চর্য বলে সমালোচনা করেন। তিনি সত্যজিত রায়ের ‘হীরকরাজার দেশে ’ছবির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন “দড়ি ধরে মারো টান, হাসিনা হবে খান খান”। শেখ হাসিনাকে তিনি ডাইনী ও যাদুকর বলেও উল্লেখ করেন। এক্ষেত্রে তিনি শেখ হাসিনা ও জনৈক মন্ত্রীর সংলাপ বানিয়ে কল্পিত রূপকাশ্রয়ী নাটকের অবতারনা করেন যা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিতে ভরা। আর এই কল্পিত নাটকে প্রধান মন্ত্রীকে নিয়ে যেসব স্লোগান দেয়া হয়েছে তা চরম আপত্তিকর ও সীমাহীন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়াও ১৫ ডিসেম্বের’ ১৫ তে পুনরায় একই রূপকনাটক পোষ্ট করা হয়েছে। এতে নয়টি ব্যাঙ্গ কার্টুন ব্যবহার হয়েছে। এসব কার্টুনে ১৬ ডিসেম্বর নিয়াজির আত্মসমর্পন, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, সজিব ওয়াজেদ জয় সহ অনেককে বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

জানা গেছে ইকবাল হোসেন বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় টিভিচ্যানেলের সাথে জড়িত। ইকবাল হোসেন ছাড়াও বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী চৌধুরী মাঈনউদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের অনুসারী আরও কিছু স্বাধীনতা বিরোধী সাংবাদিক নিয়মিত বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী দেশপ্রেমিক লোকজন এসব অপতৎপরতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের মতে বিদেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের জন্য এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। এজন্য যথাযথ আদালতে মামলা দায়েরের মাধ্যমে ইন্টারপোলের সহায়তায় তাদেরকে দেশে এনে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ কর াহউক বলে দেশ প্রেমিক মানুষেরা দাবি জানিয়েছেন।

(বি:দ্র: – উপরোক্ত অভিযোগের প্রত্যেকটি স্ট্যাটাসের স্ক্রিণ শট প্রতিবেদকের কাছে জমা আছে । আপত্তিকর হওয়ায়  এই প্রতিবেদনে সংযুক্ত করা হয় নাই ।)