ইমাম খাইর, সিবিএন:
রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বন বিহারে লুটের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
বুধবার (১৬ আগষ্ট) রাতে বিহারের কেয়ারটেকার ধন বড়ুয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ ব্যক্তির বিরুদ্ধে রামু থানায় মামলাটি করেন।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ লিয়াকত আলী মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মামলাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন নিরীহ লোকজনকে হয়রানী করা হবেনা।
রামু বৌদ্ধ ঐতিহ্য সংস্কৃতি ও পুরাকীর্তি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, সংঘবদ্ধ ও পেশাদার ডাকাতদল ঘটানটি ঘটিয়েছে। সাধারণ কোন মানুষ এতে জড়িত নয়।
তিনি বলেন, বিহারের দরজা জানাল বেশী উন্নত ছিলনা। ডাকাতদল তা বোঝতে পেরে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তারা টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছাড়া যাওয়ার সময় তারা জুতা পর্যন্ত নিয়ে গেছে। প্রশাসন সতর্কতার সাথে অগ্রসর হলে ক্লু বের করতে পারবে। তবে, কোন নিরীহ মানুষকে ঘটনায় না জড়ানোর জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু।
মঙ্গলবার (১৫ আগষ্ট) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে লুটের ঘটনাটি ঘটে। এ সময় সংঘবদ্ধ ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে বিহারের অধ্যক্ষ ও সেবককে জিম্মি করে নগদ টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে বুধবার (১৬ আগষ্ট) সকালে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন ও পুলিশ সুপার ড. ইকবাল হোসেন ঘটনাস্থল দেখতে যান। এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ শাজাহান আলী, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ নিকারুজ্জামান ও রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. লিয়াকত আলী উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার প্রসঙ্গে বিহারের অধ্যক্ষ সারমিত্র মহাথের জানান, অস্ত্রধারি ডাকাতদল বিহারে প্রবেশ করে সেখানে ঘুমিয়ে থাকা ধন বড়–য়াকে মারধর শুরু করে। তার আর্তচিংকারে তিনি জেগে ওঠেন। কক্ষ থেকে বের হতেই ডাকাতদল তাদের দুজনকে অস্ত্রের মুখি জিম্মি করে ফেলে। এসময় আরো কয়েকজন ডাকাত বিহারের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় চারটি কক্ষে চারটি আলমিরা ভেঙ্গে লুটপাট চালাতে থাকে। প্রায় ৪৫ মিনিট লুটপাট শেষে ডাকাতদল তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তিনি জানান, বিহার থেকে ৪৭ হাজার নগদ টাকা, একটি এলইডি টিভি, ২টি মোবাইল ফোন সেট, দানবাক্সের টাকাসহ বেশকিছু মালামাল লুট করে।
বিহারের সেবক ধন বড়ুয়া জানান, ডাকাতরা বিহারের দ্বিতীয় তলার খোলা জানালা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। বিহারে ঢুকে প্রথমে তাকে জোরে লাথি মেরে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে। এরপর তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চাবি দিতে বলে। তার চিৎকার শুনে বিহারাধ্যক্ষ সারমিত্র মহাথের রুম থেকে বাইরে এলে ডাকাতরা তাকেও জিম্মি করে ফেলে।
পরিদর্শনকালে সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল এ ঘটনাকে নিন্দনীয় উল্লেখ করে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের রেহায় দেয়া হবে না। অপরাধীদের আইনের আওয়তায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য তিনি আইনশৃংখলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। এছাড়া বিহারের নিরাপত্তায় তিনি আইনশৃংখলা বাহিনীকে আরো কঠোর হওয়ার আহবান জানান।
জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন ও পুলিশ সুপার ড. ইকবাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অপরাধিদের আইনের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।