এম.আর মাহমুদ:
চকরিয়ার প্রাণকেন্দ্র ও বাণিজ্যিক শহর চিরিংগার পরিবেশ দিন দিন বিষাক্ত হয়ে উঠছে। এখানে ভদ্র ঘরের নারী-পুরুষ বিপন্ন রোগী থেকে হতদরিদ্র, বয়ষ্ক ও বিধবা ভাতা উত্তোলনকারী কেউই রক্ষা পাচ্ছেনা। এক শ্রেণীর চিচকে সন্ত্রাসী ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ী ঠোকাইদের অত্যাচারে সব স্তরের মানুষ অতিষ্ঠ। বিষয়টি উপজেলা প্রশাষণ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও পৌর পিতার নজরে আছে কিনা জানা নেই। তবে বিষয়টির প্রতি নজর দিলে পাবলিক যেমন উপকৃত হবে তেমনি চকরিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক শহরের ঐতিহ্য রক্ষা পাবে।
কথায় আছে “বোবার কোন শত্র“ নেই” কারণ, বোবারা ন্যয় ও অন্যায় নিয়ে কারো পক্ষে বিপক্ষে ভুমিকা রাখতে পারেনা। সে কারণে হয়তো বোবার কোন শত্র“ নেই। বাণিজ্যিক শহর চিরিংগায় যা চলছে সচেতন জনগোষ্ঠী মুখ বুঝে হজম করলে তিলে তিলে গড়ে উঠা এই শহরের ঐতিহ্য এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই অনিচ্ছা স্বত্বেও চিরিংগার বাস্তব চিত্র উপস্থাপন করতে হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরে এক শ্রেণীর চিচকে সন্ত্রাসী ছিনতাইকারি ও মাদক কারবারে জড়িত ঠোকাই শ্রেণীর মস্তানেরা প্রতিনিয়ত নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। বিশেষ করে মার্কেট গুলোতে ভদ্র ঘরের মহিলারা প্রতিনিয়ত মোবাইল, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা হারাচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা বয়ষ্ক ও বিধবা ভাতা নিয়ে বাড়ী ফিরতে পারছেনা বেসুমার হত দরিদ্র লোকজন। আবার চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন রোগীরাও প্রতিনিয়ত হারাচ্ছে চিকিৎসার জন্য আনা টাকা-পয়সা। আবার বহিরাগত ও অপরিচিত লোকজনকে আটকিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত অপবাদ দিয়ে মারধর করে সব কেড়ে নেয়ার ঘটনা যেন নিত্যদিনের রুটিন ওয়ার্ক। এসব ঘটনার শিকার লোকজন কোথায় বা কার কাছে গিয়ে প্রতিকার পাবে তাও খুজে পাচ্ছেনা। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চকরিয়ার চিরিংগায় বেশ কটি আবাসিক হোটেলের নাম দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে অনৈতিক কর্মকান্ড। এতে মানুষ বিরক্ত। বিশেষ করে জনবসতি পুর্ণ বাঁশঘাট সড়কে রাতারাতি বেশ ক’টি আবাসিক হোটেল খোলে অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ওই এলাকার সাধারণ মানুষের কথা কর্ণপাত করছেনা। সম্প্রতি চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহেদুল ইসলাম ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী নেতৃত্বে কয়েকদফা অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু পতিতাসহ খর্দ্দর আটক করেছে। তাদেরকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদান করেছে। কিন্তু চোরে শুনেনা ধর্মের কাহিনী। প্রশাসনের অভিযানের পরও অসাধু আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী পুরানো কায়দায় অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় সচেতন মহলের। ডুলাহাজারস্থ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক এলাকায় এক শ্রেণীর অর্থলোভি অসাধু ব্যবসায়ী বেশ কিছু ‘গেষ্ট হাউস’ নাম দিয়ে পতিতা ব্যবসা শুরু করে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একাধিক অভিযানের পরে বর্তমান ওইসব গেষ্ট হাউস বন্ধ হয়ে গেছে। অনুরূপভাবে চিরিংগা আবাসিক হোটেল গুলোতে অভিযান অব্যাহত না রাখলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে বিজ্ঞ জনদের অভিমত। এলাকাবাসীর মতে চকরিয়া সদরের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চিরিংগা কেন্দ্রিক। এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা যদি এসব কু-কর্মে জড়িয়ে পড়ে চকরিয়া বাসীর সর্বনাশ হয়ে যাবে। এসব আবাসিক হোটেলের কারণে অধিকাংশ অভিভাবক নিজের ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংকিত হয়ে পড়েছে। তাই প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ ছাড়া এ সমাধান নিরসন আসা করা যায়না। চকরিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আঞ্চলিক গানের সম্রাট সিরাজুল ইসলাম আজাদের একটি গানের কলি লেখাটি ইতি টানতে যাচ্ছি চকরিয়া আবাসিক হোটেল গুলোর মালিকদের “কিয়ে নকুলার”। অনেকের প্রশ্ন এসব আবাসিক হোটেল মালিকদের মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী পরিজন কি নেই। তারা কি এসব অপকর্মের খবর শুনছেনা।
তোরারে কিয়ে নকুলার!
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।