– ইসমাইল সাজ্জাদ
১৯৭৩ সালের ৬ অক্টোবর আরব-ইসরাইল যুদ্ধ শুরু হয়। মিশর ও সিরিয়া যৌথভাবে ইসরাইলের উপর আক্রমণের সূচনা করে। ৬ অক্টোবর ছিল ইসরাইলীদের ইয়ম কিপ্পুর ধর্মীয় উৎসব। সেদিন ইসারাইলী সেনারা সবাই রোজা ছিল। মিশর ও সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানতো যে, ইসরাইলী সেনারা এদিন ইয়ম কিপ্পুর ধর্মীয় উৎসবে ব্যস্ত থাকবে। এদিন তারা অনেকটা অস্ত্রহীন কাটাবে। হঠাৎ করে মিশর ও সিরিয়া একসঙ্গে ইসরাইলের উপর হামলা করায় ইসরাইল অনেকটা অপ্রস্তুত ওই যুদ্ধে দিশেহারা হয়ে যায়। গোলান মালভূমিতে ১৪০০ সিরিয়ান ট্যাংক ১৫০টি ইসরাইলী ট্যাংকে আক্রমণ করল। অন্যদিকে সুয়েজ খাল দিয়ে ৮০ হাজার মিশরীয় সেনা ৫০০ ইসরাইলী সেনাকে আক্রমণ করল। অন্যান্য আরব দেশগুলোর মধ্যে ইরাক যুদ্ধ শুরুর কয়েক মাস আগেই মিশরকে এক স্কোয়াড্রন জেট ফাইটার সহযোগিতা পাঠাল। ইরাকি সহযোগিতায় রাশিয়ার তৈরি মিগ ফাইটারগুলো গোলান মালভূমিতে আক্রমণ চালাল। যেখানে প্রায় ১৮ হাজার ইরাকি সেনা অংশগ্রহন করল। সৌদি আরব ও কুয়েত এই যুদ্ধে মিশর ও সিরিয়াকে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার অর্থসাহায্য দিল। এছাড়া প্রায় ৩০০ সৌদি সেনা এই যুদ্ধে মিশর ও সিরিয়ার পক্ষে সরাসরি অংশ নিল। তিউনিশিয়া, সুদান ও মরক্কো এই যুদ্ধে আরবদের জন্য অর্থসাহায্য দিল। জর্ডান এই যুদ্ধে আরবদের পক্ষে সিরিয়ায় তিনটি আর্টিলারি ডিভিশান পাঠাল। ফ্রান্সের তৈরি মিরাজ ফাইটার দিয়ে লিবিয়া মিশরকে সহযোগিতা করল। ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধটি ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ ট্যাংক যুদ্ধ। যেখানে প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি ট্যাংক সরাসরি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেয়। এই যুদ্ধে আরবদের পক্ষ সমর্থন করে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলাদেশ। আর এই সমর্থনের নিদর্শন স্বরূপ বাংলাদেশ থেকে শেখ মুজিব আরব সেনাদের জন্য বিমান ভর্তি উৎকৃষ্ট মানের বাংলাদেশী চা পাঠালেন।
ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধের সময় শেখ মুজিবের আন্তরিক উপহারে মুগ্ধ মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত যুদ্ধ শেষে ১৯৭৪ সালের জুলাই মাসে ফিরতি উপহার পাঠালেন বাংলাদেশে। মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতের সেই উপহারগুলো ছিল ৩২টি টি-৫৪ ট্যাংক ও ৪০০ রাউন্ড ট্যাংকের গোলা। ফার্স্ট বেঙ্গল লান্সার তখন বাংলাদেশের একমাত্র সাঁজোয়া রেজিমেন্ট গ্রহন করে সেই ট্যাংকগুলো। ওই রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড তখন মেজর ফারুক রহমান। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেজর ফারুক স্বীকার করেন যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনার পেছনে ছিল আমেরিকার একটি মাফিয়া ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মধ্যরাতের প্রথম প্রহরে বেঙ্গল ল্যান্সারের সেই ট্যাংকগুলো রাজকীয় ভঙ্গীতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে পড়ল। নতুন বিমানবন্দর এলাকায় রাখা দুই কিলোমিটার সীমানার কামানগুলোর পাশে গিয়ে ট্যাংকগুলো জড়ো হল…
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।