রিপন বড়ুয়া: ভার্জিন – মেয়েরা যখন সাবালিকা হতে থাকে এবং তাদের প্রথম স্রাব তথা মাসিকের আগমনের পুর্বেই তাদের জরায়ুর ভিতরে এক রকম সাদা রঙয়ের হালকা আবরন থাকে যা কোন সাবালক ছেলে বা পুরুষের সাথে সংমের ফলে ছিঁড়ে যায় এবং হালকা রক্তপাত হয়। এই পর্দাটিই যার জরায়ুতে সম্পুর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে তাকেই ভার্জিন বলা হয়।
আর একটা মেয়ে যখন বিয়ের আগেই তার প্রিয় ছেলে মানুষটির সাথে শারিরীক সম্পর্কে তার ভার্জিনিটি হারায় আর তখন তার ভার্জিনিটি নিয়ে আমরা তার দিখে আঙ্গুল তুলি।
কারণ ” ভার্জিনিটি ” ব্যপার টা নিয়ে আমাদের সমাজে প্রচলিত তথাকথিত রীতিনীতি আছে অনেক।
যেমন কোন মেয়ে যদি বিয়ের আগে শারিরীক সম্পর্কে জড়িয়ে তার ভার্জিনিটি হারায়, ধোঁকাবাজির শিকার হয় তাহলে সবাই সেই মেয়েকে অপবিত্র হিসেবে গন্য করে। আমাদের সমাজে তো এটাই ধরা হয়। এই ভার্জিনিটি নিয়েই পাপ পবিত্র বিবেচনা করি আমরা।
তবে আমার মনে হয় পবিত্র ,অপবিত্র ,ভাল ,খারাপ এইসব শব্দের স্থায়ী কোন ব্যাখ্যা নেই। ব্যাক্তি ,স্থান ,পরিস্থিতি অনুযায়ী এই সব শব্দের মানে নির্ভর করে।
যেমন ধরুন এক মেয়ে ভার্জিন না , তবে সে মেয়েটা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে ,মানুষের উপকার করে,সকলের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ায়।
আরেক মেয়ে ভার্জিন , কিন্তু কয়েকটা ছেলের সাথে ভালবাসার নামে মিথ্যে অভিনয় করে,বাবা মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
এখন এই দুজনের মধ্যে কাকে আপনি পবিত্র বলতে পারবেন? শুধুমাত্র ভার্জিনিটি না থাকার জন্য অনেক মানুষের উপকার করেও কি মেয়েটি আপনার চোখে খারাপ অপবিত্র থাকবে? এমনিতে সে নিজের একটা ক্ষতি করেছে।
আর ওই মেয়ে যে ভার্জিন তবে পরের ক্ষতি করে চলেছে,মানুষের উপকার করা তো অনেক দূরে কিন্তু সে সে ভালো? কারণ তার মাথায় বড় মুকুট সে ভার্জিন। তাই তো!?
এই সামান্য ভার্জিনিটি দিয়ে কী একটা মানুষকে বিবেচনা করা উচিত?
এত কথা গুলো এ কারণে বলছি । কারণ প্রায়ই অনেক মেয়েই আছে যারা প্রতিনিয়ত দুঃচিন্তার মধ্যে থাকে কারণ সে তো মহা পাপ করেছে তার যখন রিলেশন ছিল তখন তার প্রিয় মানুষটার সাথে শারিরীক সম্পর্ক হয়েছে তবে এখন সে চলে গেছে তাকে ছেড়ে এখন সমাজ নামে গন্ডির মধ্যে সে কীভাবে থাকবে? এই মূহুর্তে তার কি করা উচিত?
আরে বোন তুমি তো মানুষ, এই দেশেরি একজন নাগরিক, তুমি মেয়ে ,তুমি প্রাপ্তবয়স্ক ,শিক্ষিতা । সম্পর্কে থাকা অবস্থায় তুমি শারিরীক সম্পর্ক করেছ। তোমার বিশ্বাস এর সুযোগ নিয়ে সে খেলেছে,এরপর সে চলে গেছে। তাইবলে তো ভেঙ্গে পড়ার কিছুই নেয়।এখন সেই শারিরিক সম্পর্কের সব দায় দায়িত্বও একজন সাহসি মানুষ হিসেবে তোমাকে মাথা উচু করে নিতে হবে।
তোমার ভার্জিনিটি নেই, এর মানে এই না যে তুমি অপবিত্র হয়ে গেছো। তুমি ভালোবেসেছিলে। ধোঁকা সে দিয়েছে। মানুষ হিসেবে পতন হয়েছে তার। তুমি তো জানো তুমি তোমার ভালোবাসার প্রতি সৎ ছিলা।
এখন নিজেকে শক্ত করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। নিজেকে গড়ার কাজে মন দিতে হবে।কারণ সামনে আরো অনেক সময় পরে আছে, সবার কাছে নিজেকে তুলে ধরতে হবে ভাল কিছুর মাধ্যমে।কারণ তোমার জীবন তোমার হাতে,তোমার ভবিষ্যত তোমার পরিচয়।কে কী বলল না বলল সে দিকে কান না দেয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ।তারা তো তোমাকে খাওয়াবেনা,তোমার ভরণপোষণ তারা করবে না,তাহলে তাদের কথা কেন শুনবে?। তোমার জীবন তোমাকেই সাজাতে হবে।
আর মানুষ হিসেবে তুমি কেমন সেইটা তোমার ভার্জিনিটি দিয়ে বিবেচনা হবে না। মানুষ হিসেবে তুমি কেমন সেইটা তুমি নিজে তোমার শিক্ষা ,কর্ম আর মানবিকতা দিয়ে তুমি নিজের হাতে গড়া জীবনের উপর নির্ভর করবে।
কাজেই তোমার জীবন তুমি গঠন করো তোমার নিয়মে,তোমার কর্মে।
লেখক: সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র
পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,চট্টগ্রাম।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।