সংবাদদাতা:
সরকারী যৌথ সিদ্ধান্ত অমান্য করে রাতের আঁধারে খুরুস্কুল আশ্রয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারদের লেলিয়ে দেয়া সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় সড়ক পাহারাদারসহ ৪ জন আহত হয়েছে।
তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সদর উপজেলার এলজিইডি ঠিকাদার কর্মচারী জাফর আলম (৩৫)কে আশংকাজনক অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
৪ আগস্ট গভীর রাত দেড়টায় কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীর স্লুইস গেইট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত জাফর পিএমখালী উত্তর নয়াপাড়ার নুরুল ইসলামের পুত্র। হামলায় প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়া অন্য আহতরা হলেন-স্থানীয় তাজ উদ্দিন, আবদু শুক্কুর, আবুল হোসেন।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়-বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে রোলার ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রোভ প্রজেক্টের আওতায় সম্প্রতি কক্সবাজার সদর উপজেলা এলজিইডি ১২ কিঃমিঃ দৈর্ঘ্যরে ব্যস্ততম বাংলাবাজার- খুরুস্কুল সড়ক কার্পেটিং-এ হাত দেয়। ইতোমধ্যে সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ হলেও ওয়ার্কিং কাজ বাকী। ইত্যবসরে খুরুস্কুলে আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। যেটির তদারকি ও নির্মাণের দায়িত্ব পায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। কিন্তু বিপত্তি ঘটে বাংলাবাজার- খুরুস্কুল সড়ক দিয়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের মালামাল পরিবহনে। শুরুতে আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ পাওয়া ঠিকাদাররা সড়কটি দিয়ে ৩০-৪০ টন ওজনের মালামাল পরিবহন করে। এতে সড়কটির কিছু অংশে ফাটল দেখা দেয়। এতে গুরত্ব বিবেচনায় যান চলাচলে আপত্তি জানায় কক্সবাজার সদর উপজেলা এলজিইডি।
পরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, সেনাবাহিনীর একজন মেজর ও কক্সবাজার এলজিইডির যৌথ সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভারি যানবাহন গতি রোধে স্লুইস গেট এলাকায় সড়কটিতে গত তিন দিন আগে ৭ ফুট ৪ ইঞ্চি জায়গা রেখে খুঁটি বসায়। ভারি যানবাহন চলাচল না করতে নির্দেশনা সম্বলিত সাইন বোর্ড টাঙ্গানো হয়। পাশাপাশি বাংলাবাজারের কোন জায়গায় মালামাল ডাউনলোড করে ১০ টনি ট্রাকের সাহায্যে খুরুস্কুলে মালামাল পরিবহনের সিদ্ধান্ত হয়। এতে কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের মালামাল পরিবহন খরচ অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। আহত জাফর জানান-আমি এলজিইডি’র ঠিকাদারের কর্মচারী। ৪ আগস্ট রাতে ভারি যান প্রতিরোধে ডিউডি করছিলাম। এসময় দু’টি নোহা ও একটি ট্রলিতে করে ২০-২৫ সদস্যের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী আকস্মিক হামলা চালিয়ে প্রথমে রাস্তায় স্থাপিত খুঁটি ভেঙ্গে ফেলে। এসময় প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা আমিসহ আরো তিন স্থানীয় বাসিন্দাদের উপর হামলে পড়ে। সন্ত্রাসীরা আমার মাথা ফেটে দেয় এবং হকি স্টিক দিয়ে সারা শরীর থেতলে দেয়।
এদিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান-সরকারী যৌথ সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তারা অন্যায় কাজ করেছে। আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি।
আহত জাফরকে হাসপাতালে দেখতে আসা খুরুস্কুল আশ্রয়ন প্রকল্পের সিকিউরিটি ইনচার্জ সার্জেন্ট শাহ আলম জানান-হামলার বিষয়টি দুঃখজনক। এটা না হলেও পারত। দু’পক্ষ বসে আমরা অবশ্যই শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছবো। অন্যদিকে ঘটনার রাতে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যাওয়া কক্সবাজার মডেল থানার এসআই মনির জানান-খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। আহতকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।