সংবাদদাতা:
কক্সবাজার-খুরুশকুল-চৌফলদন্ডী ও ঈদগাঁও আঞ্চলিক সড়কে টোল আদায়ের নামে চলছে প্রকাশ্য ডাকাতি। ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব (টোল) আদায়ের কথা বলে স্থানীয় চেয়ারম্যান হাজী ছৈয়দ আলমের নামে ডাকাতির এ টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে জানান ইজরাদারের নিয়োজিত ব্যক্তি।
প্রতিদিন ঈদগাঁও সড়কের বঙকিম বাজার এলাকায় সড়কে চলাচলরত যাত্রীবাহি গাড়ি থামিয়ে এ টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তভোগী অনেকে।
প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ, এক শ্রেনীর প্রতারক ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি ছৈয়দ আলমের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে।যাত্রীবাহি গাড়ি ঘন্টার পর ঘন্টা অবৈধভাবে দাঁড় করিয়ে রেখে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছে টোলের নামে মোটা অংকের টাকা। তাদের দাবিকৃত টাকা কোন যাত্রী পরিশোধে ব্যর্থ হলে এসব প্রতারকদের হাতে নানা ভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়।
খুরুশকুলের এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে ঈদগাঁও বাজার থেকে ৫০টি বাঁশ ও ৩ বান্ডিল খুটির বিপরীতে ৩০টাকা টেক্স পরিশোধ করে গাড়ির ছাদে করে খুরুশকুল নিয়ে আসছিল। এ সময় গাড়িটি বঙ্কিম বাজার এলাকায় পৌঁছলে ইউনিয়ন পরিষদের কথিত ইজরাদার ঈদগাও উত্তর মাইজ পাড়ার বাসিন্দা মোজাম্মেল হকের পুত্র শামশুদ্দিনের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসী প্রকৃতির দু‘ব্যাক্তি এগিয়ে এসে চলন্ত গাড়ি দাড় করায়। পরে তারা যাত্রীদের মালামাল চেক করে একই গাড়ির ছাদে থাকা বাশের বান্ডিল ও খুটির বিপরীতে ৫শত টাকার টেক্স দাবি করে। এ সব মালামালের মালিক মাল ক্রয়ের সময়ে একবার টেক্স পরিশোধের কথা বললেও গাড়ির গতিরোধকারিরা তা কিছুইতে শুনতে চায় না।
এক পর্যয়ে মালামালের মালিক তার ইজরাদারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে, সে এ সময় ঈদগাও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি ছৈয়দ আলম কর্তৃক গত ১৮/৭/২০১৭ তারিখে স্বাক্ষরিত একটি ইজরারর কাগজ দেখায়। এতে দেখা যায় উক্ত কাগজে উল্লেখ রয়েছে নিয়োগকৃত ইজরাদার শামশু শুধু মাত্র রপ্তানিযোগ্য ফার্নিচারের বিপরীতে টোল নিতে পারবে। কিন্তু সে ব্যক্তি বিশেষে ব্যবহার যোগ্য বাঁশ-গাছের উপর টোল নেয়া অবৈধ বলে বলা হলে ইজরাদার শামশুর নিয়োগকৃত মাস্তান তা মানতে নারাজ। পরে সে জোর দিয়ে বলে ঈদগাও ইউনিয়নের উপর যে কোন মালামাল নিয়ে গেলে তাদের চেয়ারম্যান বলেছে টেক্স নিতে। শেষ পর্যন্ত গাড়িতে থাকা যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপচয় রোধে ঐ মাস্তানদের চাহিদা পুরণ করে যা অবৈধ হলেও দাবিকৃত নির্ধারিত টাকা দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে হয়েছে। গাড়িতে অবস্থিত খুরুশকুলের অপর যাত্রী শাহা আলম,মোস্তাক,কবির আহম্মদ অভিযোগ করে বলেন প্রতি বাজার বারে ঈদগাও থেকে মালামাল নেয়ার সময়ে এভাবে অবৈধ টোলের নামে নিয়মিত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। একই গাড়ির হেলপার ও চালক বলেন শুধু খুরুশকুল নয় এ পথে চৌফলদন্ডী,আশপাশের ইউনিয়নসহ কক্সবাজারের লোকজন এভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে।
এদিকে চেয়ারম্যানের নামে টোল আদায় ও একাধিক যাত্রীর অভিযোগের বিষয়ে ঈদগাও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ ছৈয়দ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,এ ধরনের যাত্রী হয়রানির বিষয় খুবই দু:খ জনক। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছে।
অপরদিকে ঈদগাওতে খুরুশকুলের লোকজন অবৈধ টোল দেয়ার এব্যপারে খুরুশকুল চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনকে অবহিত করা হয়। পরে তিনি ক্ষুব্দ কন্ঠে বলেন খুরুশকুলের কোন যাত্রী ঈদগাও থেকে মালামাল কিনে নিয়ে আসার পথে টেক্স পরিশোধের শিকার হলে এক্ষেত্রে আমরাও ছাড় দেব না। ঈদগাওর চেয়ারম্যান বিষয়টি বন্ধ না করলে অচিরেই বৃহত্তর ঈদগাও‘র লোকজন প্রতিদিন কক্সবাজার থেকে খুরুশকুলের উপর দিয়ে মালামাল নিলে এতে তাদেরর টোলের আওতায় আনা হবে বলে জানান চেয়ারম্যান জসিম।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।