চকরিয়া সংবাদদাতা:

চকরিয়ায় থানা পুলিশের সহায়তায় কথিত ভুয়া মালিক সাজিয়ে লাখ টাকা মূল্যমানের একটি গরু চুরির অজুহাতে লুট করা হয়েছে। এনিয়ে গরুর প্রকৃত মালিকসহ স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ২৭জুলাই রাত ৮টার দিকে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গরু মালিক ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০১৬সালে ঈদুল আজহার কোরবানের পর কালো রংয়ে একটি নেপালী ষাড় গরু ৩৫ হাজার দিয়ে ক্রয় করেন উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরাখালী গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র খামারী নবী হোসেন। ওই ষাড় গরুটি তিনি ১বছর ধরে লালন পালন করে আসছিলেন। সর্বশেষ  ২৭ জুলাই বিকেলে ওই নেপালী ষাড় গরুটি ইলিশিয়া গরু বাজারে বিক্রি করার জন্য নেওয়া হয়। ওই ষাড় গরুটিসহ ১ জোড়া গরু বাজারমূল্য উঠে ২লাখ ৭৫হাজার টাকা। কিন্তু চকরিয়া থানা পুলিশের সোর্সের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য নিয়ে গরুটির আকৃতি ও বাজার মূল্য সাব্যস্ত পূর্বক কথিত ভূয়া মালিক সাজানো হয়। যা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। এমনকি চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)কে বিষয়টি সরাসরি অবহিত না করে থানার কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা স্বপ্রণোদিত হয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অবহিত করেন। তিনি বিষয়টি আমলে নিয়ে সাজানো ঘটনাকে সত্য মনে করে পুলিশ কর্মকর্তাদের ওই গরুটি উদ্ধারের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তারা রাত ৮টার দিকে নবী হোসেনের বাড়ি থেকে গৃহপালিত মূল্যমান গরুটি নিয়ে আসে।

জানাগেছে, পুলিশ যাকে ষাড় গরুর সাজানো ভুয়া মালিক সাজানো হয়, তিনি চট্টগ্রামের সাতকানীয়া উপজেলার ঢেমশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড দক্ষিণ ঢেমশা সোনা মাঝি বাড়ির মো: সোলাইমানের পুত্র শফিকুল ইসলাম। যিনি ভূয়া গরুর মালিক বনেছেন সে সাতকানিয়া ছদহা এমআরজি ব্রীকফিল্ডের কর্মচারী ইউনুছকে দিয়ে লালন-পালন করিয়েছেন এবং ৩মাস পূর্বে ষাড় গরুটি চুরি হয়েছে বলে দাবী করানো হয়। প্রাপ্ত তথ্যমতে কথিত কর্মচারী ইউনুছের বাড়ি পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নে এবং কথিত গরু মালিক দাবীদার জনৈক পুলিশ কর্মকর্তার দু:সর্ম্পকীয় আত্বীয়।

চকরিয়া থানা পুলিশের কথিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন এসআই কাউসার উদ্দিন চৌধুরী এবং এএসআই নাজিম উদ্দিনসহ সংগীয় পুলিশ ফোর্স। বর্তমানে গরু চুরি কিংবা লুটের ঘটনায় গরুর প্রকৃত মালিক নবী হোসেনের বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা মামলা দায়েরের চেষ্টায় রয়েছে কথিত সাজানো মালিক দাবীদাররা। এবিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। নবী হোসেন জানিয়েছেন, থানার এসআই কাওছার উদ্দিন চৌধুরী এবং এএসআই নাজিম উদ্দিন তাকে অনেকদিন ধরে এধরণের ঘটনা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে আসছেন। সর্বশেষ তার নিজ পালিত গরু নিয়ে জঘন্যতম এ ঘটনাটি সাজিয়েছেন।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, পুলিশের অভিযানে উদ্ধারকৃত গরুটির বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, গরুর প্রকৃত মালিক যাছাই-বাছাইয়ের পর সঠিক মালিক নির্ণয় করা গেলে প্রকৃত মালিকের হাতে গরুটি হস্তান্তর করা হবে।