পূর্বপশ্চিমবিডি:
নতুন করে চরম আতংকে রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ৬৫ জন সংসদ সদস্য। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য নিজ নির্বাচনী এলাকায় দলীয় কোন্দল, দুর্নীতি আর অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এমন এমপিদের সতর্ক করা হচ্ছে। ফলে বেশ আতঙ্কে রয়েছেন আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ৬৫ জন এমপি।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, এমপিদের সতর্ক করা হচ্ছে তাদের বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে। পাশাপাশি এলাকার দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সব ধরনের বিরোধ মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশও দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এরই মধ্যে বেশ কয়েক নেতাকে দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে ডেকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর পক্ষে তাদের সতর্ক করেছেন। প্রথম দিকে ঢাকার এমপিদের দলীয় কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট নেতারা। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলার নেতাদেরও ডাকা হবে।

দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে ডাক পেয়েছেন এমন দুজন এমপি বলেন, দলীয় সভাপতির পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক তাদেরকে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও নৌকার পক্ষে এখন থেকেই ভোট চাওয়ার কথা বলেছেন। এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় দ্বন্দ্ব নিরসন করে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংসদ সদস্য যারা বেপরোয়া হয়ে গেছেন, যাদের কাজকর্মে জনমনে ক্ষোভ ও বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে তাদের ডেকে সতর্ক করে দিচ্ছেন। তাদের ভালো হওয়ার কথা বলেছেন, সংশোধন হওয়ার কথা বলেছেন। জনগণ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, দলের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে, যারা জনগণের দুর্ভোগের কারণ, দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করছেন, বিভেদ তৈরি করছেন, উপদল তৈরি করছেন, আত্মীয়করণ করছেন তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে না। এটা যেমন আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, সাধারণ সম্পাদকও বলছেন। তিনি বলেন, ঢাকা-২০ আসনের এমপি এম এ মালেককেও দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এম এ মালেক বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আমাকে ডেকেছিলেন। তিনি বলেছেন, তোমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করো। নির্বাচন কঠিন হবে। তাই এখন থেকেই তোমরা নির্বাচনের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ো। প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে তিনি বলেছেন, তার নির্দেশে তোমাদের ডাকছি। তিনি বলেন, শুধু আমাকে নয় ওইদিন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, ঢাকা-১৯ আসনের এনামুর রহমানকেও ডাকা হয়েছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় তালিকা করে বিভাগ অনুযায়ী আরো ৬৫ জন এমপিকে ডাকা হবে। বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক কাজ করছে তাদের মধ্যে। কারণ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন নিজ এলাকায় জনপ্রিয়তা নেই, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন তাদের কোনোভাবেই মনোনায়ন দেয়া হবে না।