গত কয়েকদিন যাবত দৈনিক সকালের কক্সবাজার ও সিবিএন সহ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কক্সবাজার জেলায় পরিচালিত বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি’র কার্যক্রম সম্পর্কিত কয়েকটি ছবিযুক্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণরুপে অসত্য, বিভ্রান্তমূলক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আমি মো: সেলিম আহমদ সমন্বয়কারী এমআরআরও, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, কক্সবাজার ও নাজমুল আজম খান পরিচালক বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) বিশ^ রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনের গর্বিত সদস্য। বাংলাদেশ সরকারের সহযোগী সংগঠন। প্রেসিডেন্ট অ্যাক্ট ২৬ এর অধীনে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে আর্ত মানবতার সেবায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অন্যান্য সকল কার্যক্রমের পাশাপাশি যে কোনো দুর্যোগে জরুরী সাড়া দিতে ‘দুর্যোগ সাড়াদান বিভাগ’ কাজ করে থাকে। বিভাগটি কক্সবাজার জেলায় এমআরআরও ও পিএমও প্রকল্পের অধীনে কক্সবাজারে অবস্থানরত পুরনো ও নবাগত রাখাইন প্রদেশের মুসলিমদের জন্য বিবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
গত ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ অনুরোধে মালয়েশিয়া সরকারের প্রেরিত নবাগত রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রান-সামগ্রী প্রতিটি বিতরণকেন্দ্রে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের সরাসরি অংশগ্রহণ ও উপস্থিতিতে উপকার ভোগীদের মাঝে ‘ফুড ফ্লোটিলা’ মানবিক সহায়তা বিতরণের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যার প্রতিটি পর্যায়ে সরাসরি তত্ত্বাবধান করে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)।
এছাড়াও এমআরআরও প্রকল্পের অধীনে নিবন্ধিত ক্যাম্প ভিত্তিক কার্যক্রম ও পপুলেশন মুভমেন্ট অপারেশন এর ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণরুপে ভিত্তিহীন। কেননা জেলা প্রশাসনের সদয় অবগতি ও অনুমোদনক্রমে, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) সমন্বয়ে, জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট কার্য-নির্বাহী কমিটির স্বক্রিয় অংশগ্রহণে, একই সঙ্গে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত উপস্থিতিতে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদিত হয়েছে। প্রতিটি কার্যক্রম সম্পর্কে স্থানীয় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সময়ানুযায়ী অবহিত করা হয়েছে, প্রয়োজনীয় পরামর্শ মোতাবেক পরিকল্পনায় সংযোজন বিয়োজন করেছে। সুবিধাভোগীদের নামের তালিকা প্রস্তুতকরন, কার্ড বিতরন ও ত্রান বিতরনে কক্সবাজার রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট ও এর অর্ধ শতাধিক আরসিওয়াই ভাই ও বোনেরা নিরলসভাবে কাজ করেন।
কমিউনিটির মতামতের ভিত্তিতে তালিকা চুড়ান্তকরণ থেকে শুরু করে বিতরণ পর্যন্ত সর্বস্তুরে কমিউনিটির মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত ছিলো। প্রতিটি বিতরণকেন্দ্রে অভিযোগ দাখিলের সুযোগ ছিলো।
রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট এর মৌলিক নীতিমালা অনুযায়ী বিডিআরসিএস এর কর্মরত ব্যক্তিদের দ্বারা ত্রান বিতরন কোনোভাবেই প্রভাবিত হওয়ার সুযোগ নাই। ফলে কার্ড প্রতি বা ত্রাণের বাক্সপ্রতি ‘টাকা হাতিয়ে’ নেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
এখানে উল্লেখ্য যে ফুড ফ্লোটিলা উপকারভোগীর মাঝে যথাযথভাবে বিতরণ শেষে সোসাইটির মাননীয় মহাসচিব ও জেলা প্রশাসক কক্সবাজারের যৌথ উদ্দ্যেগে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গত ২৩/০৩/২০১৭ ইং তারিখ Wrapping Up Session of the Food Flotilla অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক এডিসি শিক্ষা ও আইসিটি, পুলিশ ও বিজিবির প্রতিনিধি , জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাসহ, এ ত্রাণ বিতরণ প্রক্রিয়া সাথে সংশ্লিষ্ট উখিয়া ও টেকনাফের ইউএনও, পিআইও, ওসিএলএসডি বৃন্দ,UN (UNHCR,WFP,IOM), INGO, NGO , কক্সবাজার রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য/সদস্যাবৃন্দ, অর্ধশতাধিক RCY , কক্সবাজার জেলার ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ICRC, IFRC I German Red Cross এর প্রতিনিধি উপ¯িহত ছিলেন। উপ¯িহত সকলে ফুড ফ্লোটিলা সুষ্ঠু ও যথাযথভাবে বিতরণের জন্য আইওএম ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। কোন পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণের কোন প্রকার অনিয়ম ও দুনীর্তির কথা উত্থাপিত হয় নাই। তাছাড়া দুই উপজেলায় বসবাসরত কোন রোহিঙ্গা সদস্যদের নিকট হতে এপর্যন্ত দুনীর্তির কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস পরে এহেন অভিযোগ সর্ম্পূণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
আমাদের বিশ্বাস বিশ্ব ব্যাপী মানবিক সংগঠন হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে হেয় প্রতিপন্ন ও সোসাইটির লোগো এবং আমার ছবি ব্যবহার করে আমাকে ও আমাদের প্রতিষ্ঠানের মানহানি করার জন্য কোন কুচক্রি মহলের অপপ্রয়াস মাত্র।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অদূর ভবিষ্যতে এহেন সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে আরো যাচাই-বাছাই ও দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য সংবাদ কর্মী ভাইদের অনুরোধ করছি।
প্রতিবাদকারীঃ
০১। নাজমুল আজম খাঁন
পরিচালক, দুর্যোগ সাড়াদান বিভাগ
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
০২। মোঃ সেলিম আহমেদ
সমন্বয়কারী
এমআরআরও, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, কক্সবাজার