শাহেদ মিজান, সিবিএন:
কক্সবাজার পৌরসভার পাহাড়তলীতে পাহাড় কেটে লোকজনের জায়গা দখল করেছে জাফর আলম নামে এক ব্যক্তি। তিনি একই এলাকার আলী আহমদের পুত্র। নিজেকে প্রভাবশালী দাবি করে দাপট কাটিয়ে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে অন্যের জায়গা দখল করছে এই জাফর আলম। শুধু তাই নয়, নির্বিচারে পাহাড় কাটার ফলে পাশের পাকাসহ চারটি বসত বাড়ি ধসে পড়তে পারে যেকোনো মুহূর্তে। এছাড়া পাহাড় কাটতে গিয়ে পানি ঢল নেমে পাড়ার চলাচলের প্রধান সড়কটি ভেঙে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিবাদ জানালেও কাজ হচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাহাড়তলী ইউসুফ আলী ঘোনায় মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিমে হাজী কাসেম আলী সড়ক সংলগ্ন স্থানে এক গন্ডা জায়গা কিনে জাফর আলম। সেই জায়গার পাহাড়ি হওয়ায় বিগত এক মাস ধরে শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কেটে নামানো হচ্ছে। প্রতিদিন ৭/৮ জন শ্রমিক দিন ছাড়াও গভীর রাতেও সমানতালে পাহাড় কেটে চলছে। ভারি যন্ত্র দিয়ে নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে। এরই মধ্যে পাহাড়টি অধিকাংশ কেটে ফেলা হয়েছে।
অভিযোগ মতে, নিজের এক গন্ডা জায়গার পাহাড় কাটতে গিয়ে পাশের লোকজনের জায়গারও পাহাড় কেটে ফেলছে জাফর আলম। এভাবে তিনি এরই মধ্যে তার জায়গার দক্ষিণ পাশের নুরুর, দক্ষিণ পাশের ছব্বির ও উত্তর পাশের মোনাফ নামের ব্যক্তির মালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত জায়গা পাহাড় কেটে দখল করে ফেলছে।
স্থানীয় নুরুল ইসলাম জানান, নিজে এক গন্ডার মালিক হলেও এরই মধ্যে পাহাড় কেটে তিনি প্রায় তিন গন্ডার জায়গা সমতল করে দখলে নিয়েছেন। এতে শুরু থেকে নানা ভাবে বাধা দিয়ে আসলেও কারো বাধাকে তোয়াক্কা করেনি জাফর। নিজেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতা দাবি করে প্রভাব কাটিয়ে কারো বাধা মানছে না। উল্টো ভুক্তভোগীদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে পরিণতি অত্যন্ত খারাপ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাশের লোকজনের মালিকানাধীন পাহাড়বেষ্টিত জায়গা কেটে নিচু করে করে ফেলায় ওইসব লোকজনের বসতবাড়িগুলো ধসে পড়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো এসব বসতবাড়ি ধসে পড়ে প্রাণহানিসহ মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ওইসব বসতবাড়ির লোকজন চরম আতঙ্কেও মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। অন্যদিকে গত এক মাসেরও বেশি সময় পাহাড় কাটতে গিয়ে পাহাড়ি বৃষ্টির পানি চলাচলের সড়কের উপর প্রবাহিত করাচ্ছে জাফর। পানির বিরাট ধারা পড়ায় এই সড়কটি ওই অংশ এরই মধ্যে ভেঙে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় সমাজ কমিটির নেতারা জানান, পাহাড় কাটার পানি নেমে সড়কটি অনেক নষ্ট হয়ে গেছে। সমাজ কমিটির নেতারা তাকে কয়েক বার মানা করেছে। কিন্তু তিনি প্রভাব দেখিয়ে মানা মানে না। এখনো পাহাড় কাটার ফলে রাস্তা আরো ভেঙে যাচ্ছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে জাফর আলম বলেন, ‘আমি কারো জায়গা দখল করছি না। কারো সাথে আমার সীমানা বিরোধ হয়নি নেইও। অভিযোগকারীদের নিয়ে সঠিক তদন্ত করলে আপনারা দেখতে পাবেন। তাই অধিকতর তদন্ত করার অনুরোধ করছি।’