আবদুল মজিদ, চকরিয়া:
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ইনু হত্যাসহ ডজন মামলার পলাতক আসামী হেলাল বাহিনীর প্রধান হেলাল উদ্দিন ওরফে ডাকাত হেলালের অত্যাচারে ফের অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার নিরীহ লোকজন। হেলালসহ তার বাহিনীর ১২সদস্যের বিরুদ্ধে ভূক্তভোগী পরিবারের লোকজন থানায় সর্বশেষ গত ২২জুলাই মামলা (নং ৩৮/১৭,জিআর ৩৯৫) দায়ের করেছে। সন্ত্রাসী হেলাল ডুলহাজারা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের বন্যাপাড়া (ভিলেজার পাড়া) গ্রামের আবুল খায়েরের পুত্র। এছাড়াও হত্যাসহ ডজন মামলার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে থানা, আদালত ও ইউনিয়ন পরিষদের ভুক্তভোগী পরিবার সমূহের একাধিক লিখিত অভিযোগও রয়েছে।
অভিযোগে জানাযায়, উপজেলার ডুলহাজারা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের বন্যা পাড়া (ভিলেজার পাড়া) গ্রামের আবুল খায়েরের পুত্র হেলাল উদ্দিন ওরফে ডাকাত হেলাল একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে এলাকার নিরীহ লোকজনের জমি-জমা এবং রিজার্ভ বনভূমি ও খাস জমি জবর দখল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার অত্যাচার-নির্যাতন ও দস্যুতার শিকার সাধারণ জনগণের একটাই দাবী ভূমিদস্যু ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী হেলাল বাহিনী থেকে রক্ষা পাওয়া। হেলাল বাহিনীর অত্যাচার থেকে রেহায় পায়নি একই এলাকার নিরীহ পরিবারের সদস্য মৃত আবুল হাসেমের পুত্র আবুল কালাম। আবুল কালামের দীর্ঘ ৩০বছর ধরে ২ একর ৪০শতক জমি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে থাকলেও ওই হেলাল বাহিনী তার কাছ থেকে ৫লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায় সম্প্রতি সময় থেকে ওই হেলাল বাহিনী নিরীহ আবুল কালামের ২০শতক জায়গা জবর দখলের পায়তারা চালায়। বর্তমানে ওই জায়গায় সন্ত্রাসী হেলাল তার নিজ্স্ব বাহিনী নিয়ে অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করে। তাতে বাধা দেওয়ায় ভুক্তভোগী আবুল কালাম ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশসহ নানাভাবে হুমকি-ধমকি প্রদান করে। এনিয়ে চকরিয়া আদালতে হেলাল বাহিনীর বিরুদ্ধে সিআর মামলাও করেন। এতেও ক্ষান্ত হয়নি হেলাল। সর্বশেষ গত ১৬জুলাই সকাল ৮টার দিকে সন্ত্রাসী হেলাল অবৈধ অস্ত্র শস্ত্র সহকারে তার বাহিনী নিয়ে জমি জবর দখল ও জোরপূর্বক ধান রোপন করার চেষ্টা করে। এতে বাধা দিলে আবুল কালাম ও তার পরিবারের সদস্যদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়। এবিষয়ে স্থানীয় ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদে বিচার দায়ের করার ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২২জুলাই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হেলালের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তাকে ও তার স্ত্রীকে মারধরে গুরুতর আহত করে। ওই সময় বিভিন্ন প্রজাতির ৬০০টি গাছের চারা, ৫আড়ি পরিমাণে ধানের চারা কেটে নষ্ট করে ক্ষতি সাধন করেছে। এঘটনায় ভূক্তভোগী আবুল কালাম বাদী হয়ে হেলালসহ ১২জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
কিন্তু ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আবুল কালাম, তার পরিবারের সদস্য,স্থানীয় নিরীহ ও অসহায় লোকজনের বিরুদ্ধে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে গতকাল ২৩জুলাই হেলাল বাহিনীর সদস্য রংমহল এলাকার শামসুল আলমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে বাদী সাজিয়ে হয়রাণী মূলক কথিত মিথ্যা ফৌজদারী অভিযোগ (নং সিআর ৯৪৮) দায়ের করেছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হেলাল বাহিনী মনোয়ারা বেগমকে বাদী সাজিয়ে বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক মামলা-মোকাদ্দমা ও অভিযোগ দিয়ে হয়রাণী করে যাচ্ছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, সন্ত্রাসী হেলাল সাধারণ মানুষকে জিন্মি করে নানা ধরণের অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলে কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা। প্রতিবাদ করলেই তার উপর নেমে আসে একধরণের শাররীক ও মানষিক নির্যাতন।
এলাকাবাসী আরো জানায়,এলাকার কতিপয় চিহ্নিত ব্যাক্তি ও হেলালের নেতৃত্বে বন উজাড় করে সামাজিক বনায়নের গাছ নিধন, অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন,জায়গা জবরদখল, অপহরণ, চাঁদাবাজী, ইয়াবা বিক্রিসহ বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হেলাল বিরুদ্ধে আলোচিত ইনু হত্যা মামলাসহ ডজন মামলা রয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে একের পর এক অপরাধ সংঘঠিত করে যাচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী তার এ অপরাধ কর্মকান্ড বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।