মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও
ঈদগাঁও বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন গলিতে সিঁড়ি নির্মাণ করায় মুসল্লী ও সর্বসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মসজিদ পরিচালনা কমিটি উক্ত সিড়ি সরিয়ে ফেলার কথা দিলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। সিঁড়ি বিদ্যমান থাকায় মুসল্লী ও বাজারবাসীর চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
দেখা গেছে, মসজিদ লাগোয়া উত্তর গেইটের পূর্ব পশ্চিম চলাচলের পথটি দীর্ঘবছর মুসল্লী ও বাজারে আগত লোকজন ব্যবহার করে আসছিলেন। রমজানের শেষ সপ্তাহে উক্ত চলাচল গলিতে স্থানীয় এনাম প্লাস কর্তৃপক্ষ তাদের দোকানের দ্বিতীয় তলায় গ্রাহকদের উঠানামার জন্য একটি সিঁড়ি স্থাপন করে। যা জাহাজ ভাঙ্গার শক্ত উপকরণ দিয়ে তৈরি।
বিষয়টি মুসল্লী ও স্থানীয়দের নজরে আসলে জব্বারিয়া টেইলার্সের সত্ত্বাধিকারী মাওলানা কলিম উল্লাহ আসরের নামাজের পর মসজিদে দাঁড়িয়ে এ ব্যাপারে পরিচালনা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তখন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জসিম উল্লাহ মিয়াজী ও কর্মকর্তা মমতাজুল হক মধু সওদাগর মুসল্লীদের সমস্যা ও জনগণের কষ্ট হলে তা সরিয়ে ফেলার কথা বলেন। এখনো সিঁড়ি সরিয়ে না ফেলায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার জানান, এনাম প্লাস এবং মনে রেখ অভিজাত দোকান দুটি মুখোমুখি। দু’প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ ইতিপূর্বে একসাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন। পরে তারা আলাদা হয়ে এখন নিজ নিজ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। গ্রাহক হাতিয়ে নেয়ার জন্য যেন প্রতিদিন তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে। এতে পরিচিত অনেক গ্রাহক লজ্জায় পড়েন। কোন দোকানে ঢুকবেন তা নিয়ে তাদের বিড়ম্বনা বাড়ে। আর সে কারণে এনাম প্লাস নিজস্ব অর্থায়নে দোকানের পেছনের উত্তর পশ্চিম প্রান্তে এ সিঁড়িটি স্থাপন করেছেন। যাতে তার একান্ত গ্রাহকরা লজ্জা ও বিড়ম্বনা থেকে বাঁচেন। তাছাড়া এ সিঁড়ি দিয়ে মহিলারা সহজে দ্বিতীয় তলায় কাপড় ও প্রসাধনী সামগ্রী ক্রয়ের জন্য উঠানামা করতে পারেন। দেখা গেছে, উক্ত এলাকায় ফরিদুল আলমের মালিকানাধীন মোহাম্মদীয় ক্লথ স্টোর, আমান উল্লাহর পরিচালনায় আমান ফ্যাশন. জিয়াবুল হকের মালিকানায় ড্রেস পার্ক, কায়ছার মো. সোহেলের ব্যবস্থাপনায় সোহাইল ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ছাড়াও রয়েছে মাওলানা কলিম উল্লাহর জব্বারিয়া টেইলার্স ও অন্য একজনের মালিকানাধীন স্বপ্নপূরী টেইলার্স। স্থানীয় ব্যবসায়ী, সাধারণ মুসল্লী ও সচেতন বাজারবাসীর অভিযোগ, উক্ত গলিতে সিঁড়ি লাগানোর কারণে নামাজে আগত মুসল্লী এবং চলাচলকারী লোকজনকে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সিঁড়ি দিয়ে লোকজন উঠানামা করার সময় নিচে চলাচলরত লোকজনের গায়ে ধুলিবালি পড়ে।
এ ব্যাপারে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জসিম উল্লাহ মিয়াজী বলেন, মসজিদের মালিকানাধীন গলিতে আমরা সিঁড়ি নির্মাণ করেছি। আমরা চাচ্ছি পর্যায়ক্রমে পথটি বন্ধ করে দেয়ার জন্য। কারণ, ইতিপূর্বে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চলাচলের এ পথকে গাড়ি পার্কিংয়ের নিরাপদ জায়গায় পরিণত করেছিল। ঐ পথ দিয়ে লোকজন বিশেষ করে মহিলা চলাচল করায় দৈনন্দিন নামাজের সমূহ ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া ঐ পথ দিয়ে যে সমস্ত দোকানপাট গড়ে উঠেছে সেগুলোর মুখ মসজিদমুখী ছিল না। দোকান মালিকরা নিজেদের সুবিধার্থে এগুলোর মুখ মসজিদমুখী করেছে। দোকানগুলোর ক্রেতা বিক্রেতাদের হৈ চৈ এ নামাজের বিরাট ক্ষতি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, মসজিদে আগত মুসল্লীদের জন্য আমরা মসজিদের দক্ষিণ দিকে চলাচল পথ সৃষ্টি করেছি। তাছাড়া পূর্ব দিকের প্রধান গেইট তো আছেই। স্থানীয় দোকানদাররা মসজিদ গলির কিয়দাংশ দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আর যে সিঁড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে তা মসজিদ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় উঠানামার সুবিধার্থেই করা হয়েছে। মসজিদ কর্তৃপক্ষই তা করেছেন। এতে এনাম প্লাস বা অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা নেই।