খালেদ হোসেন টাপু, রামু:
রামুতে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় পানি নামতে শুরু করলেও এখনো বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি রয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হলেও পানি কমার সাথে সাথে বন্যার্তদের দূর্ভোগ বেড়েছে। বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

এদিকে শুক্রবার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম ও রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহজাহান আলি শুকনো খাবার, চিড়া গুড় বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন।

শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকাল ৩টার দিকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বিশেষ ত্রাণ তহবিল থেকে পাঠানো ২০ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টাকা বন্যার পানিতে ডুবে নিহত দুই সহোদরের পরিবারের কাছে প্রদান করা হয়। বিকাল ৩টার দিকে রামু উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে নিহত শাহিন ও ফাহিমের বাবা কামাল হোসেন ও মা রেহেনা আক্তারের হাতে এসব নগদ টাকা তুলে দেন রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহজাহান আলী। এসময় ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম ছিলেন।
ফতেখাঁরকুল চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম জানান, তার ইউনিয়নে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও চালইন্যা পাড়া, আবদুল্লাহ পাড়া, পশ্চিম মেরংলোয়া দোকান পাড়া থেকে এখনো বন্যার পানি নামেনি। এ ভয়াবহ বন্যায় তার ইউনিয়নের ৬টি বেড়ি বাঁধসহ ৩ কিঃ মিঃ পাকা বানের পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানান।
চাকমারকুল চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার জানান, তার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পানি কমলেও এখনো চর পাড়া, পশ্চিম চাকমারকুল ও পূর্ব মোহাম্মদ পুরা এলাকা থেকে বন্যার পানি নামেনি। তবে মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে।
রাজারকুল চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান জানান, তার ইউনিয়নের হাজির পাড়া, বড়–য়া পাড়া, মৌলভী পাড়া, হালদারকুলসহ বেশ এলাকায় এখনো বানের পানিতে আটকা রয়েছে শত শথ মানুষ।
দক্ষিণ মিঠাছড়ি চেয়ারম্যান ইউনুচ ভূট্টো জানান, চর পাড়া, সিকদার পাড়ার মানুষ পানি বন্দি রয়েছে। এবারের বন্যায় তার ইউনিয়নের ২টি বেড়ি ও ৩ টি রাস্তা তলিয়ে গেছে।
খুনিয়া পালং চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ জানান, তার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যা পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে । তবে হিমছড়ি, পেঁচার দ্বীপ, ধেছুয়া পালংসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
ঈদগড় চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভূট্টো জানান, সৃষ্ট বন্যায় ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় হাজার হাজার মানুষ দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।
গর্জনিয়া চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, স্থানীয় দলীয় নেতৃবৃন্দসহ এলাকাবাসির সহযোগীতায় প্রাণপণ চেষ্টায় বাঁকখালীর সেতুর সংযোগ মোটামোটি রক্ষা হয়েছে। তবে উক্ত সংযোগ সড়কে মেরামতের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহজাহান আলি জানান, দুর্গত এলাকায় ত্রান সামগ্রী পৌছে দেওয়া হচ্ছে। কোন মানুষ যেন ত্রান না পেয়ে না থাকে সে দিকে আমাদের দৃষ্টি রয়েছে।

রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম জানান, এখনো নিম্ম অঞ্চল থেকে বন্যা কমেনি। তবে জনদূর্ভোগ বেড়েছে। দুর্গত এলাকায় ত্রান বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম ও রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহজাহান আলি ত্রান বিতরণের পাশাপাশি গর্জনিয়া বাঁকখালীর সেতুর সংযোগ সড়কের বল্লি স্পার ও সড়কের মেরামত কাজ পরিদর্শন করেন। এসময় গর্জনিয়া চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কচ্ছপিয়া চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।