নুরুল কবির, বান্দরবান
বান্দরবানে পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বেইলি ব্রিজ বালু বোঝাই ট্রাকসহ ভেঙে পড়ে রোয়াংছড়ি উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার সকালে রোয়াংছড়ি সড়কের সদর উপজেলার খানসামা পাড়া বিজিবি সেক্টর সদর দপ্তরের সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসিরা জানান, বালু বোঝাই একটি ভারি ট্রাক ব্রিজটির ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় সেটি ভেঙে পড়ে। ব্রিজটি কদিন আগে পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটির পাশ থেকে মাটি ডেবে গেলে সকালে সেটি পাতাটনসহ ভেঙে পড়ে। এখন রোয়াংছড়ি উপজেলার সাথে সড়কে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে একই সড়কে হধা বাবুর ঘোনা এলাকায় একটি বেইলি ব্রিজ পানিতে ডুবে যাওয়ায় দুদিন ধরে যানচলাচল বন্ধ ছিল। পানি নেমে যাওয়ায় বুধবার থেকে যানচলাচল শুরু হলেও সকালে নতুন করে ব্রিজ ভেঙে পড়ায় সড়কটি বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে বান্দরবানের পৌর এলাকার ইসলামপুর আমিপাড়া,ওয়াদা ব্রীজ সহ এলাকা থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি নামতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় সাংঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাকখালী নদীর পানিও কমছে। বান্দরবানের সাথে রাঙ্গামাটি ও থানছি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ চালু হলেও পাহাড় ধসের কারণে রুমা উপজেলায় এখনো সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। লামা উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এখনো লামার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ পৌছানি বলে অভিযোগ করেছে এলাকার বন্যা কবলিত জনগন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় নিচু এলাকা থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে গেলেও আশ্রয় কেন্দ্রগুলো থেকে এখনো বেশ কিছু পরিবার রয়ে গেছে। তারা এখনো বসত বাড়িতে ফিরতে পারেনি। কাঁদা-পানিতে সয়লাভ হয়ে থাকা এলাকাগুলোতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। লামা বাজারে পৌরসভার পক্ষ হতে পেলুডার দিয়ে কাদা মাটি সরিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করার কাজ চলছে। ৬টি আশ্রয় কেন্দ্রেয় মধ্যে এখনো ২টি আশ্রয় কেন্দ্রে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন অবস্থান করছে।

লামা পৌর মেয়র জাহিরুল ইসলাম জানান, কাঁদা-পানিতে সয়লাভ হয়ে থাকা বাজার এলাকা সবচেয়ে আগে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে লামা বাজারের ব্যবসায়ীরা এবার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ হতে ৭টি উপজেলায় ইতিমধ্যে ৩৫ মে.টন খাদ্য শস্য সহায়তা দেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন। উল্লেখ্য, গত একমাসের ব্যবধানে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে এবার বান্দরবানের লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাহাড় ধসে নাইক্ষ্যংছড়িতে এক নারী নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে পাহাড় ধসে এ পর্যন্ত বান্দরবানে জেলায় নিহতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৭ জনে।