ইমাম খাইর, সিবিএন:
জেলাব্যাপী বন্যা পরিস্থিতি এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ বৃষ্টির পরিমাণ কমে এসেছে। শুক্রবার ভোরের আকাশে মেঘ থাকলেও খানিক রোদের দেখা দিলেছে। তবে, বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ এখনো কমেনি।
গত তিনদিনের ধারাবাহিক প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় জেলায় এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে মহেশখালীতে ১ জন, সদরের ইসলামাবাদে ১ জন, রামুতে ৩ জন, উখিয়ায় ৫ জন এবং সীমান্তের ঘুমধুমে ১ জন।
বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় রামু উপজেলার উত্তর ফতেখাঁরকুল চালইন্নাপাড়া এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই সহোদর মোঃ শাহিন (১০) ও মোঃ ফাহিম (৮) প্রাণ হারায়। তারা ওই এলাকার কামাল হোছনের ছেলে। দুই সহোদর বাড়িতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নানার বাড়িতে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পথে প্রবল স্রোতে দুই ভাই ভেসে যায়। পরে মরদেহ উদ্ধার হয়।
উখিয়ার সোনাইছড়িতে বন্যার স্রোতে নিখোঁজ সামিরা আক্তার (১৪) নামে মাদরাসা ছাত্রীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে সোনাইছড়ি জাফর আলমের কন্যা এবং সোনাইছড়ি আয়েশা সিদ্দিকা বালিকা মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী। বুধবার ভারি বর্ষণে আকস্মিক বন্যায় ঢলের পানি সমিরা আকতার ভেসে গিয়েছিল।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন জানান, মধ্যম রত্নাপালং গ্রামের মৃত অমূল্য বড়ুয়ার ছেলে ইতুন বড়ুয়া (১৫) ও রত্নাপালং সাদৃকাটা গ্রামের কামাল উদ্দিন (৬০) নামের একজনের মরদেহ বৃহস্পতিবার উদ্ধার হয়েছে। বুধবার ভারি বর্ষণে ঢলের পানিতে রাব্বি নিখোঁজ হয়। উখিয়ার হলদিয়া পালং চৌধুরীপাড়া গ্রামে বন্যার পানিতে বাড়িঘর ডুবে থাকা নিজ খালাকে দেখতে গিয়ে পানিতে ভেসে যায় ইতুন বড়ুয়া। বৃহস্পপতিবার বিকালে হলদিয়া পালং ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের বাড়ির পিছনের খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এরআগে বুধবার (৫ জুলাই) উখিয়ার পালংখালী আনজুমানপাড়ায় দেয়ালচাপায় সরওয়ার আলমের ৭ বছরের শিশুপুত্র শাহরিয়ার হোসেন রাব্বি ও উখিয়ার পার্শ্ববর্তী ঘুমধুমে পাহাড় ধসে চেমন খাতুন (৫৫) নামে এক মহিলা মারা যায়। একই দিন সন্ধ্যায় রত্নাপালং ইউনিয়নের সাদৃকাটা নামক এলাকায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বন্যার পানি দেখে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মোঃ ইসলাম সাওদাগর (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। হিমছড়ি বড় ঝর্ণা সংলগ্ন সমুদ্র সৈকত থেকে অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়। পাহাড় ধসে মারা যায় মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মহুরাঘাটা এলাকার মনোয়ারুল আলম নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। এদিন ঢলের পানিতে খেলতে নেমে উম্মে সালমা (৭) নামে কন্যা শিশু মারা গেছে। সালমা ওই এলাকার আব্বাস মেস্ত্রির মেয়ে। সবমিলিয়ে গত তিন দিনে ১১ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।