গিয়েছিলাম দেখতে ওদের। আছেন কেমন, দিনটি কেমন, রাতের সময় স্বপ্ন কেমন, জানতে চেয়ে দিন কাটাতে, গিয়েছিলাম দেখতে ওদের।
লাখে লাখে মানুষ রে ভাই, সত্যি করে বলছি।
চিনচিনিয়ে ব্যথা ছিলো, পাহাড় বেয়ে উঠতে গিয়ে পায়ের পুরানো ব্যথা আবার কেন জানি উঠি উঠি করে, তারপরও বুকের ব্যথা কেমনে কমায়, জানার বড় ইচ্ছা ছিলো।
শুনলাম একছেলে, নয় কেলাস পড়েছিলো্ সব ছেড়ে চলে এলো। তনছা বা গণিত। গণিতকে ওরা ঐ নামেই ডাকে। খুব ভালো ছেলেটির অংকজ্ঞান।
আরেকজনের ৫ কেলাস পড়াশোনা। বাংলা তো পারেই না। পড়াশোনার অবস্থা এখন কী হবে, জানতে চায়। উৎসাহ দিই, শান্তনা দিই , হাসতে হাসতে গেলো সে। কিন্তু আমি হাসতে যেন ভুলে গেলাম।
রোহিঙ্গারা মানুষ তো নয়, অন্তত যেভাবে তারা থাকে। পাচঁ প্রস্থের দশ হাত দৈর্ঘ্য । এখানেই দশজনের সংসার।
ইজ্জত ঢাকবে? অনেকক্ষেত্রে এই ছোট জায়গায় দুইটা পরিবারের ঠাই হয়। খাওয়ার জন্য অনেকের দুমুঠো ভাত জোটে না।
বাংলাদেশে নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা, সবমিলিয়ে ৩২০০০ এর মতো। কিন্তু এর চেয়ে প্রায় পাচঁগুণ থাকে অনিবন্ধিত হয়ে। গরিব দেশে আমাদের এর চেয়ে যে সামর্থ্য নেই বুঝতে পারি।
আরো আছে সমস্যা, যারাই শরণার্থী ক্যাম্পের বাইরে থাকে, তাদের অনেকেই আবার সন্ত্রাসীদের সাথে যুক্ত। ককক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কারণে অনেক ক্ষেত্রে আইন- শৃঙ্খলার অবনতি হয়। এটাও তো অস্বীকার করা যায় না।
কিন্তু যাদের দেখে এলাম, তারা সব স্বপ্ন হারা। জীবন তাদের ঐ পঞ্চাশ হাতের মাঝেই বন্দি। তনছা বা গণিত তাদের হবে না শেখা।
রোহিঙ্গাদের জীবন যেন, দুনিয়াতে নরক।