ডেস্ক নিউজ:
বাংলাদেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে সরকার। ইতোমধ্যেই এই পরিকল্পনাপত্রটি মিয়ানমার সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সরকারের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করার না শর্তে বলেন, ‘গত মে মাসে এ পরিকল্পনাপত্রটি মিয়ানমার সরকারকে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি।’
পরিকল্পনায় কী কী আছে, জানতে চাইলে সরকারের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এর আগেও বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গারা ফেরত গেছে। আমরা সচিব বা অতিরিক্ত সচিবপর্যায়ে একটি বৈঠক করতে চাই, যেখানে পুরনো পদ্ধতিতে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাব, না নতুন কোনও উপায় বের করা যাবে, সে বিষয়ে আলোচনার করা হবে।’
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর আমন্ত্রণে মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং টুন তিনদিনের সফরে রবিবার ঢাকায় আসছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে স্বাভাবিক ও সুন্দর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক চাই। এর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমরা চাই তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও গভীর সম্পর্ক তৈরি করতে। মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।’
রোহিঙ্গা বিষয়ে কী আলোচনা হবে জানতে চাইলে, সরকারের এই কর্মকর্তা বলেন, গত মাসগুলোতে আমরা দেখেছি মুসলিম উগ্রবাদের বিষয়ে মিয়ানমার চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। তারা বলছে, গত অক্টোবরের রাখাইনে মুসলিম নির্যাতনের পরে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে, শুধু তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করতে চায়। প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর থেকে প্রায় ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণের ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
সরকারের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চাই মিয়ানমার রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করে এ সমস্যার সমাধান করুক। বাংলাদেশে সব রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যাবে। এ জন্য আমরা একটি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা দিয়েছি। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা দুই পক্ষ আলোচনা করতে চাই।’
জানুয়ারি মাসে মিয়ানমার সরকার কেউ টিন নামে একজন বিশেষ দূতকে কোনও ম্যান্ডেট ছাড়াই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য ঢাকায় পাঠায়।
এদিকে, রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অত্যাচারের বিষয়ে জানার জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল মে মাসে তিন সদস্যের একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গঠন করেছিল। কিন্তু মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল জানিয়ে দিয়েছে, এ বিষয়ে জাতিসংঘের কোনও প্রতিনিধিদলকে তারা মিয়ানমারে প্রবেশ করতে দেবে না।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।