আবদুর রাজ্জাক:

খনিজ সম্পদ বিভাগের আওতায় জিটিসিএল কোম্পানী কর্তৃক বাস্তবায়িতব্য মহেশখালী-আনোয়ারা গ্যাস সংঞ্চালন পাইপ লাইন প্রকল্প জিওবি এবং জিটিসিএল-এর নিজস্ব অর্থয়ানে ১০৩৯.৬৭ কোটি টাকা ব্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)/গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেড (জিটিসিএল) এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বিগত ১৬/০২/২০১৬ ইং ও ২৫/০৪/২০১৬ ইং তারিখ প্রত্যাশী সংস্থার বরাবরে দখল হস্তান্তর করা হয়েছে এবং পাইপ লাইন স্থাপনের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে এই প্রকল্পের কাজ আরম্ভ হয় এবং চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা ।

ইতিমধ্যে মহেশখালী উপজেলায় ৩১ কি:মি: ও পেকুয়া উপজেলায় ১৪ কি:মি: সর্বমোট ৪৫ কি:মি: গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন নির্মাণের জন্য ৮৫.৬৫ একর ভূমি অধিগ্রহন এবং ১৪৯.৭৫ একর ভূমি হুকুম দখল করা হয়েছে। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে কোহেলিয়া, উজানটিয়া ও মাতামুহুরী নদীর ক্রসিং কাজ সুসম্পন্ন হয়। কক্সবাজার জেলায় সর্বমোট ৪৫ কিঃমিঃ পাইপলাইন নির্মাণ কাজ বিগত ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে আরম্ভ হয়ে তা ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে সমাপ্ত হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারের তরফ থেকে ইতিমধ্যে অধিগ্রহণকৃত ভূমির মালিকদের মধ্যে শতকরা ৯০ জনকে তাদের ক্ষতিপূরণের অর্থ অর্থ চেক প্রদান করা হয়েছে। অবশিষ্ট অর্থ প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়,মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়ার উত্তরে এবং ঘটিভাঙ্গা মৌজার ৩নং সীটের পশ্চিমে (প্রস্তাবিত চর মকবুল মৌজার) বিএস ২০০১ নং দাগ সংলগ্ন জরিপ বিহিন চরভরাট জমি চর্চা ম্যাপের মাধ্যমে চিহ্নিত ২০০১/২ দাগের জরিপ বর্হিভুত চরভরাট ৫০০.০০ একর জমি অকৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা-১৯৯৫ এর ১০ নং অনুচ্ছেদের আলোকে বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা) এর অনুকূলে (বিনা সালামী/প্রতিকী মূল্যে) চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এ কার্যালয়ের ১৭/১১/২০১৬ তারিখের ১৩৫২ নং স্মারক মুলে দীর্ঘমেয়াদী (অকৃষি) বন্দোবস্ত মামলা নং-০৪/২০১৬ (মহেশখালী) ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। তাছাড়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায়Land Based LNG Terminal নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় মহেশখালী উপজেলায় ৬’শত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ক্ষমতা সম্পন্ন একটি Custody Transfer Metering Station (CTMS) স্থাপনের লক্ষ্যে বর্তমানে ভূমি উন্নয়ন কাজ চলমান আছে। মহেশখালী উপজেলার দক্ষিণে সোনাদিয়া এলাকায় অর্থাৎ পাইপ লাইন স্থাপনের প্রবেশদ্বারে যুক্তরাষ্টের Excelerate Energy Bangladesh Limited(EEBL) কতৃক BOOT পদ্ধতিতে এ টার্মিনালের নির্মাণের নিমিত্তে ১৮জুলাই ২০১৬ EEBLএর সাথে BOOT ভিত্তিতে মহেশখালীতে দৈনিক ৫০০ এমএমসিএফ ক্ষমতা সম্পন্ন ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস নাগাদ মহেশখালীস্থ CTMS এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে মহেশখালীর অদূরে গভীর সমুদ্র বন্দরে পেট্রোবাংলা কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এলএনজি টার্মিনাল তথা Floating Storage and Re-gasification Unit (FSRU) হতে দৈনিক ৫’শত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মহেশখালী-আনোয়ারা পাইপ লাইনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রীডে সঞ্চালন করা সম্ভব হবে এবং আগামী বছরের মার্চ মাস নাগাদ ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল হতে জাতীয় গ্রীডে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করছেন। EEBL, Bathymetry/Geophysical study সম্পন্ন করেছে এবং তদানুযায়ী টার্মিনালের স্থায়ী অবকাঠামোর Technical Design এর জন্য বর্ণিত স্থানটি কারিগরীভাবে উপযোগী মর্মে পেট্রোবাংলাকে অবহিত করেছে। EEBL গত ২৪/১১/১৬ ইং হতে Geotechnical study করে এবং ১৪/১২/১৬ ইং তারিখ Geotechnical Field Work সম্পন্ন হয়। বর্তমানে Design, Drawing এর কাজ এবং long lead item এর চুক্তি সম্পাদনের কাজ চলমান রয়েছে।

EEBL এর ৩৭৭৬৫৫.৭০ ঊ, ২৩৮১৭৬১.০০ ঘ. অবস্থানে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র প্রদানের অনুরোধ জানিয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া সমুদ্রবক্ষে প্রায় ৭.৫ কিমি subsea পাইপ লাইন স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।