মো. নাজিম উদ্দিন, দক্ষিন চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
টানা তিনদিনের ভারি বর্ষণে পাহাড়ী ঢলে বন্যায় সাতকানিয়ায় নি¤œাঞ্চল প্লাবিত ও ৫শতাধিক ঘরবাড়ী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ঘর হারা এসব মানুষ খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যার পানি বুধবার বিকালে উঁচু এলাকা থেকে নামতে শুরু করেছে। এখনো লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে আছে। বন্যায় উপজেলার বাজালিয়া বড়দুয়ারা মাহালিয়া রাস্তার মাথা এলাকায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কে গত মঙ্গলবার ভোর থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বুধবার বিকালে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। বান্দরবান চট্টগ্রাম সড়কে দুদিন ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বান্দরবানের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় রাস্তার উভয় পাশে শত শত গাড়ী আটকা পড়েছে। এতে হাজারও যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। এসময় যাত্রীরা পানিতে ডুবে থাকা স্থানে নৌকা, ভ্যান ও রিক্সা দিয়ে পার হচ্ছে। মো. শাহাদাত হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভ্যান দিয়ে পার হতে হচ্ছে। আমার মতো হাজারও মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রতিবছর বন্যা হলে মাহালিয়া এলাকায় সড়কটি ডুবে থাকে। সড়কটি উঁচু করা হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে। উপজেলার বাজালিয়া, ছদাহা, কেঁওচিয়া, পশ্চিম ঢেমশা, দক্ষিণ ঢেমশা, সদর ইউনিয়ন, সোনাকানিয়া, চরতী, আমিলাইষ, ধর্মপুর ও কালিয়াইশে বন্যায় কয়েক শতাধিক মৎস্য পজেক্ট ডুবে চাষীদের কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাহাড় ধসে মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর কাঞ্চনা মথোরা ডাঙ্গার বাসীন্দা আমির হামজার ৩টি গরু মারা গেছে। গরু তিনটির মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার জানায়।
চরতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডা. রেজাউল করিম বলেন, নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির ¯্রােতে চরতী এলাকার নদীর তীরবর্তী কয়েক শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের তালিকা করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। বন্যার পানি কমে যাচ্ছে।
আমিলাইষ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম হানিফ বলেন, কয়েকদিনের টানা বর্ষণে শঙ্খ নদীর পানি বেড়ে সহ¯্রাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। নদীর তীরে বসবাসরত দুই শতাধিক ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে।
বাজালিয়া বড়দুয়ারার বাসীন্দা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, মাহালিয়া রাস্তার মাথায় সড়ক এখনো (বুধবার) ৩ ফুট পানিতে ডুবে রয়েছে। সড়কের উভয় পাশে আটকা পড়া গাড়ীর যাত্রীরা নৌকা, ভ্যান ও রিক্সা দিয়ে পার হচ্ছে। সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুদিন ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্রতিবছর বন্যা হলে এই সড়কটি পানিতে ডুবে যায়। এতে যাতায়তরত যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। সড়কটি উঁচু করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির সম্পর্কে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হয়েছে। পাহাড়ী ঢলে নদীর তীরে বসবাসরত বেশকিছু ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সরকারী ভাবে এখনো বন্যা কবলিত এলাকার জন্য ত্রাণ সামগ্রী আসেনি। যেসব এলাকায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাড়ানোর জন্য চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।