সেলিনা হোসাইন, পেকুয়া:
মরতুজা বেগম (৩২)। দিনমজুর স্বামী ওয়াহিদুল ইসলাম ও দুই সন্তান নিয়ে পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা আধার মানিকে তার বসবাস। স্বামীর আয়ে চলতি বছরের শুরুর দিকে গড়ে তুলেছিলেন নতুন ঘর। চারপাশে বাঁশের বেড়া, উপরে তার টিন।
কিন্তু সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বর্ষণ ও প্রবল বাতাসে দেখা দেয় পাহাড় ধস। এতে আহত হয়েছেন মরতুজা। সোমবার (১৩জুন) দুপুরে নিজের বসতঘর পাহাড় ধসে বিধ্বস্ত হওয়াতে আশ্রয় নিয়েছেন একই ইউনিয়নের মাঝের ঘোনা পাড়ার পিতার বাড়িতে। এখানেও কতোটা ঝুঁকিমুক্ত তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দিহান তিনি নিজেই। কারণ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত তার বাপের বাড়িও যে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে ওই বাড়িতে বসবাসকারী তার ১০ নিকটাত্মীয়। বুধবার দুপুরে এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি এ শঙ্কার কথা জানান।
একইভাবে মারাত্মক মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করে আসছেন পেকুয়া উপজেলার পাহাড় বেষ্টিত তিন ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ঘরে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে এসব মানুষ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করে আসলেও তাদের সরিয়ে নিতে বা পুর্নবাসন করতে উদ্যোগী নয় স্থানীয় প্রশাসন। তাই বড় ধরণের কোন দুর্ঘটনা ঘটলে দায় এড়াতে পারবেন না তারা। এমনকি পাহাড় ধসের আশংকা থাকা সত্বেও তাদের সরিয়ে নিতে উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সেভ দ্যা নেচার অব বাংলাদেশ পেকুয়া উপজেলা শাখার সহসভাপতি ইমরান হোসাইন বলেন, উপজেলার টইটং ইউনিয়নের সংগ্রামের জুম, বটতলীর গহীন অরণ্য মধুখালী, হারখিলারঝিরা, আধার মানিক, পুর্ব ধনিয়াকাটা, বারবাকিয়া ইউনিয়নের আবাদি ঘোনা, পুর্ব পাহাড়িয়াখালী, চাকমার ডুরি, ছনখোলার জুম ও শিলখালী ইউনিয়নের জারুরবুনিয়া, সাপের গাড়া, মাদাবুনিয়া, মাঝের ঘোনা, চিতার ঝিরি, নাপিতার ঘোনা, সবুজ পাড়া, ঢালার মুখ, পুর্ব শিলখালীতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে আসছে। দ্রুত সময়ে তাদের সরিয়ে না নিলে বড় রকমের দুর্ঘটনার
আশংকা থেকেই যায়।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম বলেন, পাহাড়ে ঝুকিপূর্নভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে বনবিভাগের রেঞ্জারকে নির্দেশনা
দেওয়া হয়েছে। তবে কখন সরানো হবে এ বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি তিনি।