ডেস্ক নিউজ:
ভারী বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের তিন জেলায় পাহাড় ধসে অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী রাঙামাটিতে ৫৮ জন, চট্টগ্রামে ১২ জন এবং বান্দরবানে ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রাঙামাটিতে। রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে সেনা কর্মকর্তাসহ অন্তত ৫৮ জন নিহত হয়েছেন ও ৫৬ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। নিহত সেনাসদস্যের সংখ্যা ৬। তবে নাম পাওয়া গেছে চার জনের। তারা হলেন- মেজর মাহফুজ, ক্যাপটেন তানভির, করপোরাল আজিজ, সৈনিক শাহিন। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে, রাঙামাটির সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পানি ওঠায় মঙ্গলবার সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর কারণে সকাল থেকে আন্তঃজেলা বাস ছেড়ে যায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মাইনুদ্দিন সেলিম।
সোমবার রাত থেকে রাঙামাটি শহরের পুরো এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।অনেক স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্থানে মাটিতে ফাটলও শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের পর বৃষ্টি ছাড়ালে অভ্যন্তরীণ রুটে যান চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে নৌ যান বন্ধ রয়েছে।
রাঙামাটির কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ রশীদ জানিয়েছেন, এটা একটা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। মৃতের সংখ্যা আরো অনেক বাড়বে। অনেক স্থানেই এখনো মানুষ মাটি চাপা পড়ে আছে।
চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় ধসে ১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি এলাকায় পাহাড় ধসে এক শিশুসহ চারজন নিহত হয়।
সোমবার রাতে থেকে মঙ্গলবার সকাল পযন্ত এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দু’জন।
ধোপাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু ইউছুপ চৌধুরী পূর্ব-পশ্চিম অনলাইনকে জানান, সোমবার রাতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী আসগর আলীর কাঁচা ঘরের ওপর মাটি ধসে পড়ে। এ ঘটনায় আজগর আলীর শিশুকন্যা মাহিয়া মাটির নিচে চাপা পড়ে মারা যায়।
এছাড়া ছনবুনিয়া উপজাতিপাড়ায় একটি ঘরের ওপর পাহাড় ধসে একই পরিবারের দুই শিশু কেউচা কেয়াং (১০), মেমাউ কেয়াং (১৩) এবং গৃহবধূ মোকাইং কেয়াং (৫০) নিহত হন।
এদিকে রাঙ্গুনিয়ার রাজানগর ইউনিয়নের বগাবিলিসহ এই উপজেলায় পাহাড় ধসে আটজনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে পারেননি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর ফইল্যাতলী এলাকায় দেয়াল ধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হোসেন।
এদিকে, টানা বর্ষণে বান্দরবানের কালাঘাটা এলাকায় তিনটি স্থানে পাহাড় ধসে পড়েছে। এতে তিন শিশুসহ ৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরো ২ জন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। সোমবার রাত ৩টার দিকে প্রবল বর্ষণের সময় কালাঘাটা এলাকার কবরস্থানের পাশে, জেলেপাড়া ও লেমুঝিরি আগাপাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সাব অফিসার স্বপন কুমার ঘোষ বলেন, ঘটনার পর আমরা মাটির নিচ থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।