পরিবর্তন ডটকম:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির সামনে আপাতত চার চ্যালেঞ্জ। সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়, দল ও জোটকে ঐক্যবদ্ধ রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ, প্রার্থী বাছাই, মামলা-হামলা মোকাবিলা করা, এ চার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘নীরব’ পরিকল্পনায় ব্যস্ত দলটি। বিএনপি নেতারা মনে করেন, সহায়ক সরকারের দাবি আদায় খুব সহজ হবে না। এ জন্য দলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সামনে দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
যে কারণে আগেই থেকে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের তালিকা তৈরি কাজ শেষ করা হয়েছে। সময় মতো তা চূড়ান্ত করা হবে। তাছাড়া দাবি আদায়ে সরকারের নির্যাতনের হাত থেকে দলের নেতাকর্মীদের রক্ষা করে আগামীদিনে রাজপথে কীভাবে সরব থাকা যায় সেটাও মাথায় রেখে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। সময় সুযোগ মতো দাবি আদায়ে বিএনপি মাঠে নামবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের জন্য সহায়ক সরকারের একটি রূপরেখা দেব। খুব শিগগিরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তা তুলে ধরবেন।’
তিনি বলেন, ‘আগেই বলেছি কোনো দলীয় সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সূষ্ঠু হতে পারে না। তাই আমরা একটি নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলছি। যে নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি বড় দল সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তত থাকে।’
২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বয়কট করলেও আগামীতে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে কোনোরকম ছাড়া দিতে নারাজ বিএনপি। রমজানের বিভিন্ন ইফতার মাহফিলে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যেও এমনটা ফুটে উঠেছে। গত রোববার ঢাকার গুলশানে ইমানুয়েলস সেন্টারে মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত ইফতার মাহফিলে খালেদাজিয়া বলেন, ‘আগামীতে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচন হবে সহায়ক সরকারের অধীনে, সকাল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে বাদ দিয়ে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। হতে দেওয়া হবে না। এদেশে নির্বাচন হবে সহায়ক সরকারের অধীনে, হাসিনার অধীনে নয়। হাসিনার অধীনে নির্বাচন কয়েকবার দেখেছি। সারা পৃথিবী বলেছে ২০১৪ সালের বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি এরইমধ্যে সারাদেশে থেকে ইফতার পার্টিগুলোকে কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের একটা সুয়োগ হিসেবে নিয়েছে। কারণ সাধারণভাবে বিএনপি নেতাকর্মীরা একত্রে মিলিত হতে পারে না। রমজানে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সুযোগটা কাজে লাগানো যায়। দলের হাইকমান্ড থেকেও রমজান ঘিরে নির্দেশনা দেওয়া ছিল ইফতার পার্টিকে কাজে লাগিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা যাতে নির্বাচনের আগে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে। স্বাভাবিক রাজনীতির করতে না পাড়ায় দলের নেতাকর্মীরা ঝিমিয়ে পড়েছে। ফলে ইফতার পার্টির মাধ্যমে কর্মীদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার হবে। যা সরকারে বুঝতে পেরে অনেক জায়গায় বিএনপির ইফতার পার্টিতে বাধা দিয়েছে বলেও জানান দলের কেউ কেউ।
বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। এই জন্য সহায়ক সরকারের কথা বলেছি। এ দাবি আদায় আমাদের সমানে বড় চ্যালেঞ্জ। যে নামে খুশি ডাকুক না কেন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির বারবার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়েছে। এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সরকারের অত্যাচার নির্যাতন-নিপীড়ন। আমাদের ইফতার পার্টিগুলোও করতে দিচ্ছে না। এমন কী বেগম খালেদা জিয়ার ইফতার পার্টিও করতে দিচ্ছে না সরকার। জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটা ইফতার পার্টি ছিল সেটা করতে দেওয়া হচ্ছে না।’
নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত আছে, যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে, সময়মতো চূড়ান্ত করা হবে।’
বিএনপির সামনে চার চ্যালেঞ্জ
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে