নিউজ ডেস্ক
আর নেতার এমন কথার প্রেক্ষিতেই চাকরি চেয়ে ঠাকুরগাঁও থেকে ফেসবুকে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী মো. সাইফুর রহমান বাদশা। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাইফুর রহমান বাদশার হাত পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির ক্যাডাররা। বর্তমানে তিনি পঙ্গু।
চিকিৎসাধীন সময়ে তাকে অনেক নেতা চাকরির আশ্বাস দিলেও বর্তমানে তিনি অন্যের জমিতে বর্গা চাষ করেন। তাই দলের সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের কাছে একটি চাকরি পান বলে দাবি করেছেন।
চলতি বছরের ২৪ মে তার সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়স শেষ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেছেন একটি চাকরিতে রিটেনে টেকার পরও চাকরি পাননি বা তাকে দেয়া হয়নি।
এমন অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে একটি চাকরি চেয়েছেন তিনি। অন্যথায় এক বোতল বিষ উপহার দেয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন তার চিঠিতে।
পাঠকের সুবিধার্থে মো. সাইফুর রহমান বাদশার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
‘মাননীয় সাধারণ সম্পাদক,
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,
কেন্দ্রিয় কমিটি
বিষয়ঃ চাকুরীর জন্য আবেদন
জনাব,
যথাবিহিত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক নিবেদন এই যে আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক একজন কর্মী। ২০০৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হবার পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাবি শাখার একজন কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলাম, ২০১০ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জামাত শিবিরের অতর্কিত হামলায় আমার সহযোদ্ধা গণিত বিভাগের মেধাবী ছাত্র ফারুক হোসেন নিহত হন, আমার এবং ফিরোজ মোহাম্মদ আরিফুজ্জামানের হাত পায়ের রগ কেটে দেয় শিবির ক্যাডাররা, সেই সাথে বিভিন্নভাবে কুপিয়ে আহত করে আরো ১৫-২০ জন ছাত্রলীগ নেতা কর্মীকে..
আমি আমরা দীর্ঘদিন মৃত্যুরর সাথে পাঞ্জা লড়ে কোন মতে বেচে যাই, মানে পঙ্গু হয়ে যাই..
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ এবং ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় সেই সময়ে সাবেক মন্ত্রী সাহারা খাতুন, আফম রুহুল হক, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজার রহমান ফিজার, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, প্রয়াত মুজিবুর রহমান ফকির, বর্তমান প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ শতাধিক সংসদ সদস্য হাসপাতালে আমাদের দেখতে এসে সুচিকিৎসার পাশাপাশি কর্মসংস্থান এর আশ্বাস দেন…
তারপর কেটে গেছে সাড়ে সাত বছর, গত ২৪ মে সরকারী চাকুরীতে আবেদনের বয়স শেষও হয়ে গেছে.. রিটেনে টেকার পরও কেউ একটা চাকুরী দিতে পারেননি, দেননি..
আমার একটা চাকুরী পাওনা ছিলো আওয়ামী লীগের কাছে….
আজ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আপনার বক্তব্যে আশাবাদী হলাম, আপনী বলেছেন চাকুরীর বয়স শেষ হয়ে গেলেও আপনি ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের চাকুরী দিবেন,
শুনতে পান কি মাননীয় সাধারণ সম্পাদক,
আমি বাংলা বিভাগে স্নাতক (সম্মান) সহ স্নাতকোত্তর পাশ……
চাকুরি না পেয়ে, বয়স শেষ হয়ে যাওয়াতে আমি এখন অন্যের জমিতে বর্গা চাষ করি। যা দিয়ে আমার স্ত্রী পুত্র বয়স্ক বাবা মায়ের খরচ বহন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে…
অতএব জনাব সাধারণ সম্পাদকের কাছে পিয়ন/এমএলএসএস এর একটি চাকুরী চাচ্ছি, যেটা দিয়ে আমি আমার পরিবার পরিজনসহ খেয়ে পড়ে বেচে থাকার নিশ্চয়তা পাই..
আমার আশা এবং বিশ্বাস মাননীয় সাধারণ সম্পাদক দলের জন্য আমার ত্যাগ, নির্যাতিত হওয়া, পঙ্গু হওয়া, অবদান সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমার একটা সরকারী চাকুরীর ব্যবস্থা করবেন নয়তো একবোতল বিষ উপহার দিবেন.
নিবেদক
মোঃ সাইফুর রহমান বাদশা,
সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা..’
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।