এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া:
চকরিয়া উপজেলার রামপুর সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতির পক্ষে উচ্চ আদালতের দেয়া আদেশ দুই মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন না করায় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) ও কক্সবাজার জেলা এবং চকরিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে তলব করেছে হাইর্কোট। সমিতির পক্ষে দায়ের করা আদালত অবমাননার মামলার প্রেক্ষিতে গত ৬ জুন হাইর্কোটের বিচারপতি মো.আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাশ এর সমন্বয়ে গঠিত দৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
মামলার বাদি পক্ষের কৌশলী হাইর্কোটের সিনিয়র আইনজীবি মো.রায়হানুল মোস্তাফা বলেন, রামপুর সমিতির মামলার প্রেক্ষিতে চলতিবছরের ১২ জানুয়ারী বিচারপতি মো.আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাশ এর সমন্বয়ে গঠিত দৈত বেঞ্চ সমিতির মালিকানাধীন ৫ হাজার ১১২একর চিংড়ি জমি দুই মাসের মধ্যে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদেরকে (সমিতিকে) দখল বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বিবাদিপক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু মামলার বিবাদি ভুমি মন্ত্রানালয়ের সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি), উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও রামপুর পুলিশ ফাঁিড়র আইসিসহ অভিযুক্ত ১৪জন আদালতের আদেশের বিষয়টি দুইমাসেও কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি বলেন, এ অবস্থার প্রেক্ষিতে রামপুর সমিতির বর্তমান সম্পাদক আদালত অবমাননার অভিযোগে একই বেঞ্চে একটি মামলা করেন। গত ৬জুন মামলার শুনানী শেষে আদালত বিবাদি পক্ষের তিন কর্মকর্তাকে শোকজ পুর্বক হাইর্কোটে তলব করেন। একই সাথে অপরাপর বিবাদিপক্ষকে রামপুর সমিতির বর্ণিত দাগের জায়গার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
রামপুর সমবায় কৃষি উপনিবেশ সমিতির বর্তমান সম্পাদক শহীদুল ইসলাম লিটন বলেন, চকরিয়া উপজেলার রামপুর মৌজার আরএস ১০৮৩, ১০৮৪, ১০৮৬, ১১১০, ১১১১ ও ১১২০ তৎ বিএস ২০০৮, ২০২৯, ২০০২, ২০২৭, ২০২৮, ও ২০৪০ দাগের ৫ হাজার ১১২ একর চিংড়ি জমি তাদের পুর্ব পুরুষের সম্পত্তি। ১৯৬৯ সাল এসব জমি চিংড়িজাষের উপযুগী করে ভুমিহীন প্রায় ১০ হাজার পরিবার ভোগদখলে থেকে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। পরবর্তীতে সরকার চকরিয়া সুন্দরবন প্রতিষ্ঠা করলে তাদের (ভুমিহীন) বেশির ভাগ জমি কব্জাভুক্ত করেন। এ অবস্থায় জীবিকার অবলম্বন হারিয়ে ভুমিহীন পরিবার গুলো পথে বসে।
সমিতির সম্পাদক শহীদুল ইসলাম লিটন বলেন, এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সংক্ষুদ্ধ হয়ে তৎকালীণ সময়ে সমিতির প্রয়াত সভাপতি এসআই চৌধুরী বাদি হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সমিতির পক্ষে জমি ফেরত চেয়ে হাইর্কোটে একটি রিট মামলা (নং ১০৯৬২/১২) দায়ের করেন। ২০১২ সালে মামলার শুনানী শেষে হাইর্কোটের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি খোরশেদ আলম সরকার সমন্বয়ে গঠিত দৈত বেঞ্চ সমস্ত দলিলপত্র পর্যালোচনা করে সমিতির পক্ষে এস্টে অর্ডার দেন।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারী ওই মামলার পুর্নাঙ্গ শুনানী শেষে বিচারপতি মো.আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাশ এর সমন্বয়ে গঠিত দৈত বেঞ্চ সমিতির মালিকানাধীন ৫ হাজার ১১২একর চিংড়ি জমি দুই মাসের মধ্যে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদেরকে (সমিতিকে) দখল বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বিবাদিপক্ষকে নির্দেশ দেন।
কিন্তু আদালতের আদেশের পর প্রায় ৫মাস সময় অতিবাহিত হলেও মামলার বিবাদিপক্ষ কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে তিনি (সমিতির সম্পাদক) বাদি হয়ে ভুমি মন্ত্রানালয়ের সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি), উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও রামপুর পুলিশ ফাঁিড়র আইসিসহ ১৪জনকে বিবাদি করে একই আদালতে আদেশ অবমাননার অভিযোগে ফের আরো একটি মামলা করেন।
গত ৬জুন মামলার শুনানী শেষে আদালত বিবাদি পক্ষের তিন কর্মকর্তাকে শোকজ পুর্বক হাইর্কোটে তলব করেন। একই সাথে অপরাপর বিবাদিপক্ষকে রামপুর সমিতির বর্ণিত দাগের জায়গার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।