জিকির উল্লাহ জিকু
আমার ছয় বছরের ছেলে নোমান সাইদের হাত থাকবেনা। আমার ছেলে আর আর কোন দিন তার ডান হাত দিয়ে ভাত খেতে পারবে না। আমাকে মা বলে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরতে পারবে না। তাকে নিয়ে আমার অনেক টেনশন। কি করি!
সোমবার দিবাগত রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের বারান্দায় অঝোর নয়নে কথাগুলো বলছিলেন বড় মহেশখালীর বড়ডেইল বাসিন্দা কলিমা খাতুন। করুণ ভাষায় তুলে ধনের ছেলে নোমান সাইদের চিকিৎসার কথা।
পিতা তৈয়ব কবির বলেন, গত ২৭শে মে খেলা খেলতে গিয়ে স্থানীয় পাশের একটি ৩ ফুট উচু ওয়াল থেকে পড়ে গিয়ে আমার ছেলের হাত মচকে যায়। তাকে নিয়ে মহেশখালী হাসপাতালে যাওয়ার পথে নতুন বাজারে স্থানীয় কয়েকজনের পরামর্শে জাগির ঘোনা নিবাসী পশ্চিম জাগিরা ঘোনা মৃত মোছন আলীর পুত্র শরীফের (হাঁড় ভাঙ্গার ডাক্তার নামে এলাকায় পরিচিত) কাছে যই। নতুন বাজার মক্বা ফার্মেসী থেকে কিছু ঔষধ নিতে বলে ছেলের হাতের মধ্যে একটি ব্যান্ডেজ দেন। এক্স-রে করাইতে চাইলেও প্রয়োজন নাই বলেন। সহসাই ভাল হয়ে যাবে বলে আশ^াস দেন।
কথাগুলো ২৮ নভেম্বরের। চিকিৎসা বাবদ ফি নেন ৭০০ টাকা। কিন্ত কয়েক দিন পর হাতে ফুলা দেখা দেয়। আবার গেলে স্বাভাবিক ভাবে মাঝে মধ্যে এমন হয়, চিন্তার কোন কারণ নেই, ঠিক হয়ে যাবে বলে ফিস নেন ২০০ টাকা। একদিন পর হাতের অবস্থা আরো করুন। তৃতীয়বার মোঃ শরীফের (হাঁড় ভাঙ্গার ডাক্তার নামে এলাকায় পরিচিত) সাথে দেখা করলে ব্যান্ডেজ পাল্টে দিয়ে ১০০ টাকা ফি নেয়। পুনরায় ভাল হয়ে যাবে বলে আশ^াস দেন।
তিনি বলেন, পরিশেষে আমার ছেলের হাতের অবস্থা শোচনীয়ভাবে খারাপ হলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। অর্থোপেডিক বিভাগের ডাক্তারগণ একদিন চিকিৎসা করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে এবং আশংকার কথা শুনে ছেলের মা কাঁদছে।
এবিষয়ে সাইদ নোমানের হাতের চিকিৎসাকারী মোঃ শরীফের ০১৮৬৩-৮৮৩৬৮৮ মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লেখা পড়া নাই শুধুমাত্র দেখা শুনার উপর নির্ভর করে চিকিৎসা করে। এর আগেও বিভিন্ন রোগীর অভিভাবকরা বিচার নিয়ে আসে। তবুও টাকার লোভে এই পেশা ছাড়ছে না।
বর্তমানে ড়চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিক বিভাগে ছেলের চিকিৎসারত (পুরো নামা আবদুল্লাহ আল নোমান) সাইদের পিতা মুঠোফোনে জানান, তাঁহার ছেলের অবস্থা আশংকা জনক। উন্নতমানের চিকিৎসা নিতে বিশাল টাকা লাগবে। যা আমাদের গরীবের কাছে নাই। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসক জানিয়েছেন ছেলেকে বাঁচাতে উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে নয়তো হাত কাটা ছাড়া কোন উপায় থাকবেনা। ভুল চিকিৎসার কারণে এমন হয়েছে বলে চিকিৎসক তাদের জানিয়েছেন।
হাতুড়ে চিকিৎসক মোঃ শরীরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।