আব্দুল মালেক সিকদার, রামু
রামু উপজেলা খুনিয়া পালং ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় মোরার তান্ডবে ২০০৫-০৬ সালের (বাপার জুন) সামাািজক বনায়নের হাজার হাজার গাছ ভেঙে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, রামু উপজেলার ধোয়া পালং রেঞ্জের অধীনে খুনিয়া পালং বিটের বলি পাড়া এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে বাপার জুন সামাজিক বনায়নের হাজার হাজার গাছ ভেঙে যায়। এতে করে বনবিভাগের কাছ থেকে টেন্ডারপ্রাপ্ত সামাজিক বনায়নের লট ব্যবসায়িরা চরম ক্ষতির শিকার হয়েছে।
এদিকে, ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ও ১৮ই অক্টোবর দু’দফায় কক্সবাজার বাপারজুন সামাজিক বনায়নের টেন্ডারের জন্য দরপত্রের আহ্বান করে দক্ষিণ বনবিভাগ। এলাকার লট ব্যবসায়ীরা টেন্ডারের গাছগুলো দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয় করে। এই সময় রেঞ্জ কর্মকর্তা কতটি গাছ আছে প্লটে কাগজেপত্রে বুঝিয়া দিলেও সরেজমিনে বাগান বুঝিয়া দিতে পারে নাই কর্মকর্তারা। বাগানে প্রতি প্লটে প্রায় ৫শত ফুট গাছ থাকার কথা থাকলেও আছে দুইশত ফুট। তিনশ ফুটের স্থলে গাছ আছে একশ ফুট। এরই মধ্যে অনেক গাছ চুরিও হয়ে যায়। বাগানে ১০০% স্থলে আছে ৩০% গাছ।
অন্যদিকে, লটের হিসাবের সাথে বাগানের গাছের কোন মিল না হওয়ায় স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তাকে লট ব্যবসায়ীরা মৌখিকভাবে বার বার অভিযোগ করলেও তিনি মিমাংসার আশ^াস প্রদান করেও এই পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেন নাই।
স্থানীয়রা জানান, রেঞ্জ কর্মকর্তা ও চুরের যোগ সাজসে বাগান থেকে অনেক গাছ চুরি হয়েছে। রেঞ্জ কর্মকর্তার গা-ফিলতির কারণে গাছগুলো সংরক্ষণ করা যাই নাই। রেঞ্জ কর্মকর্তা ধোয়া পালং থাকার কথা থাকলেও বসবাস করে কক্সবাজার শহরে। তাকে ফোন করলে ব্যস্ত আছে বলে ফোন কেটে দেয়। শহরে থাকার কারণে কোন সহযোগীতা পাওয়া যায় না রেঞ্জ কর্মকর্তার কাজ থেকে। লট ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, আমরা সরকারকে ২৫% টাকা জমা দিয়ে লটের গাছগুলো ক্রয় করি। কিন্তু যতগুলো গাছ আমরা ক্রয় করেছি তা সরেজমিনে বাগান বুঝিয়ে দিতে পারে নাই রেঞ্জ কর্মকর্তা। রেঞ্জ কর্মকর্তা আমাদের ক্রয়কৃত প্লট বাতিল করার হুমকি দিচ্ছে। যদি বাতিল করে আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব। বনায়ন অনেক গাছ ঘূর্ণিঝড় মোরার তান্ডবে ভেঙ্গে যায় এবং চুরি হয়ে যাওয়ায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিনে বনায়ন পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দক্ষিণ বনবিভাগে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
উপকারভোগী আবু তাহের, আবদুল গফুর, হোসেন আহম্মদ জানান, বাগানে ১০০% গাছ থাকার কথা থাকলেও আছে ৩০%। আগে অনেক গাছ চুর হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক গাছ ভেঙ্গে গেছে।
ধোয়া পালং রেঞ্জ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান, গাছ চুরির বিষয়ে অস্বীকার করে ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে গাছ ভেঙ্গে যাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদেরকে গাছ কেটে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আবারও নোটিশ দেব। যদি গাছ কেটে নিয়ে না যায়- সরকারী নিয়ম অনযায়ী টেন্ডার বাতিল করব এবং টেন্ডার ক্রয়কৃত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করব।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আলী কবিরের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের গাছ কেটে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বাগান রক্ষা করার দায়িত্ব তাদের, আমাদের না। আমরা তাদেরকে বলেছি ঘূর্ণিঝড় মোরারের তান্ডবে ভেঙে যাওয়া গাছগুলো নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু তারা আনে না।
রামুতে মোরার প্রভাবে বাফারজুন সামাজিক বনায়নের ব্যাপক ক্ষতি
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।