বিশেষ প্রতিবেদক:
রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে অবৈধভাবে নির্মাণাধীন ৫টি ইটভাটা বন্ধে দুই সচিব,কক্সবাজরের জেলা প্রশাসক,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ২০ সরকারী কর্মকর্তা,জনপ্রতিনিধি ৃও ইটভাটামালিকে আইনী নোটিশ দিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি ( বেলা)। একই সাথে ওই এলাকায় নির্মিত ইভাটাসমূহের অনুকূলে প্রদত্ত সকল প্রকার অবস্থানগত, পরিবেশগত ছাড়পত্র ও ইটপোড়ানো লাইসেন্স বাতিলের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে নোটিশ প্রাপ্তদের গৃহীত পদক্ষেপ নোটিশ প্রদানের ৭ দিনের মধ্যে বেলা’র আইনজীবিকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় নোটিশ প্রাপ্ত ২০ জনের বিরূদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। ১ জুন সুপ্রীমকোর্ট ও বেলা’র আইনজীবি সাঈদ আহমেদ কবীর ডাকযোগে এ নোটিশটি পাঠিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেলা’র আইনজীবি সাঈদ আহমেদ কবীর।
নোটিশে বলা হয়েছে, কাউয়ারখোপ এলাকার বাসিন্দাগণ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এ এলাকার তিনদিকে বনবিভাগের সংরক্ষিত বন ও সরকারি রাবার বাগান বিদ্যমান থাকায় কৃষি জমির পরিমাণ সীমিত। এ সীমিত কৃষিজমিতে ১০টি ইটভাটা নির্মিত হওয়ায় কৃষিজমি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। অধিকন্তু ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি। ফলশ্রুতিতে ফসলি জমি রুপান্তরিত হচ্ছে বদ্ধ জলাধারে যেখানে স্বাভাবিক ফসল উৎপাদন মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফসলি জমিতে গড়ে উঠা এসব ইটভাটা একদিকে যেমন কৃষিজমি হ্রাস করে অকৃষি জমিতে পরিণত করছে অন্যদিকে সংরক্ষিত ও রাবার বাগান ধ্বংস করে উল্লেখিত এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা মারাত্বক হুমকিরমূখে ফেলছে। একইসাথে ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া এলাকাবাসীর সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকারকে লঙ্ঘিত করছে। এসব ইটভাটার দূষণ থেকে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ফসলি জমি ও বনভূমি রক্ষার্থে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একাধিকবার আবেদন করলেও ইটভাটা নির্মাণ বন্ধে বা উচ্ছেদ করতে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বরং এসব ইটভাটার অধিকাংশেরই অনুকুলে পরিবেশগত ও ইটপোড়ানো সনদ প্রদান করা হয়েছে যা ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১৩-এর পরিপন্থি।
বেলার পক্ষ থেকে দেয়া এ নোটিশে আরো বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে ইটভাটাগুলোর দূষণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় এলাকাবাসী পরিবেশগত ন্যায়বিচার পেতে বেলা‘র কিাছে আইনী সহায়তার অঅবেদন করেছে। এলকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বেলা’র প্রতিনিধি এলাকাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে এবং অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পান। পরিদর্শনকালে দেখা যায় ইটভাটাগুলো ফসলি জমি ও সামাজিক বনায়নসহ রিজার্ভ বনভুমি সংলগ্ন এলাকায় আইন বর্হিভুত পদ্ধতিতে ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অথচ দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী উক্ত এলাকা ইটভাটা স্থাপনের জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ স্থান। অত্র এলাকায় কোনভাবেই ইটভাটা স্থাপিত হতে পারবে না এবং কোনরূপ ছাড়পত্র প্রদান করার কোন এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষের নেই। তারপরও দেশের প্রচলিত আইন উপেক্ষা করে নির্মিত ও নির্মাণাধীন ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ, গ্রহণযোগ্য স্থানে স্থানান্তর ও সকল প্রকার সনদ বাতিল করে আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা নোটিশপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব যা পালনে তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
সুপ্রীমকোর্ট ও বেলা’র আইনজীবি সাঈদ আহমেদ কবীর বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি এ নোটিশের মাধ্যমে কক্সবাজারর রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ফসলি জমি ও সরকারী বনভুমির পাশে আইনের বিধান অমান্য করে গড়ে তোলি ইটভাটাগুলোর সকল কার্যক্রম বন্ধ এবং উল্লেখিত স্থান থেকে স্থানান্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।