শাহেদ মিজান, সিবিএন:
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাত থেকে বাঁচতে নিরাপদে আশ্রয় নেয়া কক্সবাজার বিভিন্ন স্থানের তিন লাখ মানুষ বাড়ি ফিরে গেছে। ‘মোরা’র প্রভাব থামার পর সকাল ১১টা থেকে লোকজন বাড়ি ফিরতে শুরু করে। বেলা ৩টা নাগাদ সব আশ্রয়প্রার্থী বাড়ি ফিরে গেছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিশ্চিত করেছেন। সকালের দিকে মহাবিপদ সংকেতের মুখে তারা ফিরলেও দুপুরের বিপদ সংকেত কমে যায়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের মধ্যে পুরো কুতুবদিয়া উপজেলা, কক্সবাজার পৌরসভা এলাকার ১নং ওয়ার্ড, মহেশখালীর মাতারবাড়ি, ঘলঘাটা, কুতুবজোম, সোনাদিয়া, টেকনাফের বাহারছড়া, সাবরাং ও সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন, পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়াসহ আরো কয়েকটি উপকূলীয় এলাকা, চকরিয়া ও কক্সবাজার সদরের পোকখালী, খুরুশকুল এলাকার অন্তত তিন লাখ মানুষ ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাত থেকে বাঁচতে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। এর মধ্যে ছিলো সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সোমবার ইফতারের পর থেকে এসব মানুষ নিরাপদে চলে যায়। সারা রাত সেখানে অবস্থান করে মঙ্গলবার সকাল ৮টার ‘মোরা’ থেমে গেলে আশ্রয়প্রার্থীরা বাড়ি ফিরে যেতে মরিয়া হয়ে উঠে। তবে বিপদ সংকেত না কমায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বারণ করা হয়। প্রশাসনের কঠোর বারণের মুখেও মানুষগুলো বাড়ির পথ ধরে।
কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম নূরুল বশর চৌধুরী জানান, কুতুবদিয়ায় সরকারি সাইক্লোন শেল্টার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয় নি¤œাঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার লোক। ‘মোরা’ থেমে যাওয়ার পরপরই তারা বাড়ি ফিরে যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের বারণের মুখেও তারা বাড়ি ফিরে যায়।
পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু জানান, পেকুয়ার তিন ইউনিয়ন মগনামা, উজানটিয়া ও রাজাখালীর প্রায় ৪০ মানুষ আশ্রয়ের জন্য বাড়ি ছেড়ে যায়। ‘মোরা’ থামার পরই সকাল ১০টা থেকে তারা বাড়ি ফিরতে শুরু করে এবং দুপুরের মধ্যে বাড়ি ফিরে যায়।
ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান জানান, ধলঘাটায় ২০ হাজার লোক রয়েছে। ইউনিয়নের নয়টি সরকারি সাইক্লোন সেল্টার ও চারটি বিদ্যালয়ে ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় নেন। বাকিদের মধ্যে ছয়/সাত হাজার মানুষকে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন মাতারবাড়ি ও কালারমারছড়ায় আশ্রয় নেয়। ‘মোরা’র প্রভাব থামার পর ৩টার মধ্যে তারা বাড়ি চলে যায়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা পাঁচ লাখ মানুষের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা রেখেছিলাম। কিন্তু তত মানুষ ঝুঁকিতে ছিলো না। ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় তিন লাখ মানুষ বাড়ি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নেয়। তাদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইফতার ও সেহেরীর ব্যবস্থা করা হয়। ‘মোরা’ থামার পর তারা বাড়ি ফিরতে শুরু করলে বিপদ সংকেত না কমায় আমরা তাদের নিষেধ করি। কিন্তু নিষেধের মুখে অনেকে বাড়ি ফিরে যায়। বাকিরা পরে ফিরে।’
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।