নিজস্ব প্রতিবেদক:
হোয়ানকের কালাগাজির পাড়ায় যুবক এনামুল হককে (৩৫) প্রতিপক্ষ জালাল বাহিনীর সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন নিহতের পরিবার। সংবাদ সম্মেলন করে নিহত এনামের পরিবার এই দাবি করেন। শুক্রবার বিকালে কক্সবাজারের একটি হোটেলে জরুরী এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত এনামের মা মাবিয়া খাতুন। এসময় নিহতের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমসহ আরো কয়েকজন আত্মীয় উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে পরিবারের লোকজন দাবি করেন, আইয়ুব আলী বাহিনীর সাথে এনামের কোনো ধরণের সম্পক্ততা নেই। এমনকি তাদের সাথে যোগাযোগ পর্যন্ত নেই। কিন্তু আয়ুব আলীর বাহিনীর আত্মীয় হওয়ায় এনামকে তিন/চারটি মামলায় আসামী করে জালাল বাহিনীর লোকজন। এসব মামলায় আত্মসম্পর্ণ করে কয়েক মাস জেল কেটে তিন মাসে আগে জেল থেকে মুক্তি পায় এনাম। জেল থেকে বের হয়ে এলাকা থেকে চলে গিয়ে দূরবর্তী হরিয়ারছড়ায় গিয়ে বসতবাড়ি নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। কিছু ব্যবসা-বাণিজ্য করে পরিবারের ভরণপোষণ করে এসেছেন। তারপরও জালাল বাহিনীর সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পিতভাবে তাকে তোলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে।
নিহতের মা মাবিয়া খাতুন বলেন, জামিন নেয়ার পর থেকে এনাম এলাকায় প্রকাশ্যে চলাফেরা করে আসছে। একই সাথে নানা টুকটাক ব্যবসা করে পরিবারের ভরনপোষণ করে আসছিল। বৃহস্পতিবার আটকের কিছুক্ষণ আগে এনাম মামলা হাজিরা দিয়ে কক্সবাজার থেকে পৌঁেছছিল। সেখান থেকে আগে থেকে পরিকল্পিতভাবে জালাল বাহিনীর সন্ত্রাসী আবুল কালামের পুত্র আবছার ও ছিদ্দিকের পুত্র ইসমাঈল নেতৃত্বে জালাল বাহিনীর সদস্যরা ওৎপেতে থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে ওই সন্ত্রাসীরা গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা এনামকে গুলি করে হত্যা করে হরিয়ারছড়া বিদ্যাপীট এলাকায় লাশ ফেলে যায়। পুলিশ সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ওসি প্রদীপ কুমার দাশও বিষয়টি এভাবে বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিক জানিয়েছেন দু’পক্ষের গোলগুলি ঘটনায় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে এনামের লাশ উদ্ধার করেন। তবে সেখানে কোনো ধরণের বন্দুকযুদ্ধ হয়নি।
মাবিয়া খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এনাম কখনো সন্ত্রাসী ছিলোনা। তাকে সন্ত্রাসী বানানো হয়েছে। সন্ত্রাসী বানিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সবকিছুর পরিকল্পনায় রয়েছে জালাল বাহিনীর রমিজ, আবু তালেব, আবু বক্কর, জালাল প্রকাশ কালাইয়া। আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই। হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানাই।
মাবিয়া খাতুন আরো বলেন, তিন বছর আগে আমার ভাতিজা আশেক উল্লাহকে অপরহণ করে গুম করে জালাল বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। সেই থেকে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পালিয়ে আবছার, আমিনসহ একদল সন্ত্রাসী কেরুনতলীতে লুকিয়ে আছে। অন্যদিকে জসিম, পারভেজ, ইসমাঈলসহ আরেকদল সন্ত্রাসী কালারমারছড়ায় সন্ত্রাসীদের আস্তানায় লুকিয়ে থাকে। বেশ কিছুদিন ধরে ওই সন্ত্রাসীরা রাতের আঁধারে দু’দিক থেকে আমাদের হামলার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এরই অংশ হিসেবে এনামকে পরিকল্পিতভাবে তোলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে।