রোবোকপ এত দিন কেবল কল্পকাহিনি আর চলচ্চিত্রের রোমাঞ্চকর উপাদান ছিল, এবার তা সত্যি সত্যি মাটির ধরায় এসেছে। দুবাইয়ের রাস্তায় রোবোকপ নামিয়েছে দেশটির পুলিশ বিভাগ। এখন থেকে শহরের শপিং মল আর পর্যটন এলাকায় টহল দেবে এ রোবট।
এই রোবটের মাধ্যমে অপরাধবিষয়ক তথ্য পুলিশকে দেওয়া যাবে। ট্রাফিক আইন অমান্যবিষয়ক জরিমানাও নেবে এই রোবোকপ। এটির বুকে থাকা টাচস্ক্রিন ব্যবহার করে নানা তথ্যও দিতে পারবে পথচারী। রোবটের মাধ্যমে সংগৃহীত এ তথ্য পরিবহন এবং ট্রাফিক পুলিশকেও দেওয়া হবে।
দুবাইয়ের সরকারি কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পুলিশ বাহিনীর ৩০ শতাংশ সদস্য রোবট থাকবে বলে তাদের লক্ষ্য। দুবাই পুলিশের স্মার্ট সেবা সার্ভিসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার খালিদ আল রাজুকি বলেন, এই যন্ত্রের মাধ্যমে আমরা আমাদের পুলিশ সদস্যদের প্রতিস্থাপন করব না। তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু দুবাইয়ে জনসংখ্যা বাড়ছে, আমরা চাই পুলিশ কর্মকর্তারা একটি নিরাপদ শহর গঠনে মনোযোগ দিয়ে কাজ করুন। এই উপায় ব্যবহার করে তাঁরা সারাক্ষণ সেবা দিতে পারবেন। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সারাক্ষণ সংযুক্ত থাকার মাধ্যমে অপরাধ দমনেও তাঁরা সহায়তা করতে পারবেন।
খালিদ আল রাজুকি বলেন, ‘শপিং মল বা রাস্তায় মানুষকে সাহায্য-সহায়তা করার জন্যই রোবট পুলিশ নামানো হয়েছে। আমাদের শহরের অপরাধ দমন, শহর নিরাপদ রাখা এবং মানুষের সুখের মাত্রা বাড়ানোর জন্যই এই পুলিশ রাস্তায় নামানো হয়েছে।’গত মার্চে দুবাইতে এক অনুষ্ঠানে এই রোবট পুলিশ বাহিনীর পরিকল্পনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
বর্তমানে এই রোবট পুলিশ শুধু ইংরেজি ও আরবিতে যোগাযোগ করতে পারে। এতে রুশ, চায়নিজ, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষাও সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। আগামী বছর আরও একটি রোবট দুবাই পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে তা নির্ভর করবে অর্থায়নের ওপর।
দুবাই পুলিশ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কেন্দ্রের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার আবদুল্লাহ বিন সুলতান গালফ নিউজকে বলেন, ‘পুলিশি ব্যবস্থার জন্য আমরা ভবিষ্যতে আরও রোবটের ব্যবহার করব। ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের পুলিশ বাহিনীর মোট সদস্যর প্রায় ২৫ শতাংশ রোবট ব্যবহার করতে আগ্রহী।’
দুবাই পুলিশের প্রধান মেজর জেনারেল আবদুল্লাহ খলিফা আল মেরিরি বলেন, ‘আশা করছি, আমাদের লক্ষ্য অর্জনে আমাদের পুলিশ চৌকস হবে। বিশ্বের কিছু কিছু দেশের পুলিশ বাহিনী পরীক্ষামূলকভাবে রোবট ব্যবহার করছে এবং আমরাও ভবিষ্যতে তা করার পরিকল্পনা করছি।’রোবট পুলিশ ২০ মিটার দূর থেকে অন্যর মুখ স্ক্যান করার ক্ষমতা রাখে। এ ছাড়া তার বুকের ওপরে একটি টাচস্ক্রিন বসানো আছে, যা দিয়ে জনগণ অপরাধের জন্য পুলিশের কাছে প্রতিবেদন পাঠাতে ব্যবহার করতে পারে। টাচস্ক্রিনে একটি মাইক্রোফোন বসানো আছে, যা দিয়ে সরাসরি দুবাই পুলিশে কল সেন্টারগুলোতে ফোন করা যাবে।
দুবাই পুলিশের প্রধান মেজর জেনারেল আবদুল্লাহ খলিফা আল মেরিরি বলেন, ‘ভবিষ্যতে অপরাধ মোকাবিলার জন্য আমরা এমন নিরাপত্তাব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছি। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ২০২৫ সাল নাগাদ দুবাই বিশ্বের সেরা পাঁচ শহরের মধ্য থাকবে।’ তিনি এ-ও বলেন যে ২০১৩ সালের মধ্যে শহরের ৫০ শতাংশ পুলিশ ভবন স্ব-পরিচালিত হবে। পুলিশের ডিএনএ তথ্য ব্যাংক নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।’
দুবাই পুলিশের স্মার্ট সেবা সার্ভিসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার খালিদ আল রাজুকি বলেন, ‘আমরা দুবাই পুলিশের সবকিছু দক্ষতার সঙ্গে করার চেষ্টা করছি।’ তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।